অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়া উচিত

সম্পাদকীয় : শুধু কি চাঁদপুরেই, সারাদেশেই অবৈধ স্থাপনা রয়েছে; যা’ উচ্ছেদ হওয়া উচিত। কিছু অসাধু ব্যক্তিদের ক্ষমতাবলে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে; আর তারা তা’ বছরের পর বছর ধরে ভোগ করে যাচ্ছে। একটু চোখ-কান খুলে দিলে, একটু ঝাঁকানি দিলেই বের হয়ে আসবে দখলদারের কারসাজি। বিশেষ করে পার্কিং স্পেসের জায়গা নির্মাণকরা হয়েছে অবৈধ স্থাপনা; এতে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। একটু খোঁজ করলেই দেখা যাবে যে, ভবনে নকশায় পার্কিং আছে; কিন্তু বাস্তবে সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা বানানো হয়েছে, সেসব স্থাপনা ভেঙে দেয়া দরকার। আর এটা সত্য যে, একটি বাসযোগ্য পরিচ্ছন্ন পরিবেশ গড়ে তুলতে অবৈধ উচ্ছেদের কোনো বিকল্প নেই। এ কথা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই যে, রাজনৈতিক প্রভাব ও একশ্রেণীর কর্মকর্তার অবৈধ অর্থের লালসাই পরিস্থিতিকে গুরুতর করে তুলেছে। ব্যাপারটি এক দিনে হয়নি। দীর্ঘদিন ধরে অনিয়মের মাশুলই দিচ্ছে সাধারণ মানুষজন!

বলা যায়, স্বাধীনতার পর থেকে একটি পরিকল্পিত নগরি গড়ে তুলতে অনীহার কারণেই অবস্থা এরূপ হয়েছে। সে আলোচনা এখন অর্থহীন। এটাই সত্যি যে, অবৈধ স্থাপনাকে একমাত্রিক বিবেচনার কোনো সুযোগ নেই। অনেক স্থাপনা রয়েছে যা প্রকৃত অর্থেই অবৈধ। আবার অনেক স্থাপনা রয়েছে যা বৈধতার আড়ালে অবৈধ। কোথাও কোথাও আবার দেখা যাচ্ছে যে, ভবন হয়ত বৈধ, কিন্তু তাতে যেসব প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে সেগুলো অবৈধ। আবাসিক এলাকায় গড়ে উঠেছে স্কুল-কলেজ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল, শপিং মলসহ নানা ধরনের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান।

এভাবে যত্রতত্র বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠার মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এর ফলে একদিকে যেমনি যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, অন্যদিকে নানা অবৈধ কারবারও ঠাঁই করে নিচ্ছে বা নিতে পারার মতো বাস্তবতা সৃষ্টি হচ্ছে। ফুটপাত থেকে শুরু করে ড্রেন-নর্দমা সবকিছুই এখন অবৈধ স্থাপনার দখলে। সামান্য বৃষ্টিতে পানিবদ্ধতা তৈরি হওয়ার পিছনেও অবৈধ স্থাপনা অনেকাংশে দায়ী। আমরা জানি যে, এমন অনেক ড্রেন রয়েছে যেগুলোর ওপর অবৈধ স্থাপনা থাকায় বছরের পর বছর পরিষ্কার পর্যন্ত করা হচ্ছে না। এসব অবৈধ স্থাপনা ঘিরে অবৈধ নেশার বাণিজ্যও চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে অনেক দিন থেকে।

যানজটমুক্ত করতে সড়কের দু’পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথাও অনেক আগে থেকে বলা হচ্ছে। ফুটপাত অন্যদের দখলে থাকলে সাধারণের ফুটপাত ব্যবহারের কোনো সুযোগ থাকে না। এটা সড়ক দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অন্যতম একটি কারণ হিসেবে বিবেচিত। দেখা যায়, একদিকে অভিযান চলে অন্যদিকে আবার পরিস্থিতি যা তা-ই দাঁড়ায়। এ নিয়ে যেন এক ধরনের ইঁদুর-বিড়াল খেলা চলছে অনেক দিন ধরে। মনে করা হয়, উচ্ছেদ আর অবৈধ স্থাপনা পুনঃস্থাপনের মাঝে চলে টাকার খেলা। এটা বন্ধ হওয়া উচিত। আরো কঠোর হতে হবে। কেবল উচ্ছেদ নয়, প্রয়োজনে আইন অমান্যকারীদের প্লট বাতিলসহ কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

একটি পরিবেশবান্ধব, যানজটমুক্ত, আবদ্ধ পানিমুক্ত, বাসযোগ্য, দৃষ্টিনন্দন নগরী গড়ে তুলতে সমন্বিত কর্মপন্থার কোনো বিকল্প নেই। প্রতিটি মানুষ যেন সুখেই থাকতে পারে। এ ব্যাপারে সকলেই আন্তরিক হবেন – এটাই প্রত্যাশিত।

নিউজ পোর্টাল চাঁদপুর রিপোর্টে “চাঁদপুর কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কে পাঁচ শতাধিক অবৈধ স্থাপন উচ্ছেদ” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদটি পাঠান্তে মানুষ খুশিই হয়েছেন। আর এটা খুশিই হওয়ার কথা! কেননা অবৈধ কোনো কিছুই ভালো হতে পারে না। প্রকাশিত সংবাদের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, “চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের দু’পাশের প্রায় ৫ শতাধিক অবৈধ স্থাপনা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদ করা হয়েছে। ২৬ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে শাহরাস্তি উপজেলার দোয়াভাঙ্গা এলাকায় জেলা প্রশাসন ও সওজ বিভাগ চাঁদপুরের যৌথ উদ্যোগে এসব অবৈধ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।” আমরা আরো জানতে পেরেছি যে, সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা দখলমুক্ত করার লক্ষ্যেই এ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে।

আমরা প্রত্যাশা এ অভিযান অব্যহত থাকবে। কিন্তু দু:খের বিষয় যে, “এর আগেও একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিলো। কিন্তু কয়েকদিন পরে আবারও সড়কের এ জায়গাগুলোর দু’পাশ অবৈধভাবে দখল হয়ে যায়। উচ্ছেদ করে সরকারের যে অর্থ ও সময় ব্যয় হয় সেটির সুফল আর পাওয়া সম্ভব হয় না।” এমনটা সাধারণ জনগণ প্রত্যাশা করে না। জনগণ বাস্তবায়নই আশা করে; আর সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ হওয়ার বিকল্প নেই।

শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪

সোরিয়াসিস হলে কী করবেন?

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

চর্মরোগ দাউদ একজিমা বিখাউজের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

Loading

শেয়ার করুন