চাঁদপুরে ৭ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলায় অন্যতম আকর্ষণ সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেডের ‘হলুদ ড্রাগন’ ফল

সাদ্দাম হোসেন : চাঁদপুর জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের যৌথ আয়োজনে হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত সপ্তাহব্যাপী জেলা বৃক্ষমেলায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের স্টলে শোভা পাচ্ছে অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ড্রাগন ফল। পাশাপাশি রয়েছে ড্রাগন ফলের রাজা হলুদ ড্রাগন ফলও।

এ ফলটি ব্যাপকভাবে চাষ হচ্ছে মতলব উত্তরের সাদুল্যাপুর গ্রামে। সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেডের উদ্যোগে ড্রাগন ফল চাষ করা হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুষ্টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে শিল্পক্ষেত্রের স্বনামধন্য জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এবিএম নাসির উদ্দিন সরকার সিকোটেক্স এ্যাগ্রো প্রতিষ্ঠা করেন। সাদুল্যাপুর গ্রামে সিকোটেক্স এ্যাগ্রোতে ড্রাগন ফল চাষের জন্য ৫ একর জায়গা রয়েছে। ড্রাগন ফলের রাজা হলুদ ড্রাগন এখানে সম্পন্ন প্রাকৃতিক জৈব সারের মাধ্যমে ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে।

প্রখ্যাত কৃষিবিদ কামরুজ্জামান বিদেশ থেকে  ড্রাগন ফলটি প্রথম বাংলাদেশে আনেন, পরবর্তীতে বাংলাদেশের কৃষকরা চাষবাস শুরু করলে এ ফলের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে সারাদেশে সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। ড্রাগন ফলে পুষ্টিগুণ প্রচুর পরিমাণে হওয়ায় চিকিৎসকগণও রোগীদের এ ফলটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।

ড্রাগন ফলের ইতিহাস, উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ সম্পর্কে জানা যায় “ড্রাগন” ফলের জন্ম স্থান মেক্সিকোসহ সেন্ট্রাল আমেরিকার কয়েকটি দেশ। এই ফল বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয়। বাংলাদেশেও এই ফলের চাষ ব্যাপক আকারে শুরু হয়েছে। এ ফলটি স্বাদে ও সৌন্দর্যে অতুলনীয়। সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড সাধারণ মানুষের পুষ্টি চাহিদা পূরণের লক্ষ্যে শুরু করেছেন ড্রাগন ফলের চাষ।

এ ফল পুষ্টির অমূল্য সঞ্চিত ধন-ভান্ডার। এ ফলে আছে বিপুল পরিমাণ ভিটামিন-এ, সি, ই, বি-১, বি-৩, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন, শর্করা, ফাইবার (আঁশ), ক্যালরী ইত্যাদি। রক্তে আয়রন লেভেল বাড়িয়ে দেয় ও গ¬ুকোজের পরিমাণ কমায়। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। এই ফল ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। শরীরের সকল কোষকে সতেজ রাখে ফলে বার্ধক্য বিলম্বিত হয় ও জীবনি শক্তি বৃদ্ধি পায়। কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।পেটের পীড়া প্রতিরোধ করে। পাঁচনতন্ত্র শক্তিশালী করে ও ডায়রিয়ার ঝুঁকি কমায়।

শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে। স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়। কোষ্ট-কাটিন্য প্রতিরোধ করে। শ্বেত রক্ত কনিকা সুরক্ষিত রাখে। হজমে সাহায্য করে। রক্ত শূন্যতা দূরিভূত করে। ত্বকের সৌন্দর্য্য ও উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে। শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশে উৎপাদিত ড্রাগন ফল বিক্রির পূর্বে ফ্রিজিং প্রয়োজন না বলে এর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ অটুট থাকে।

জানা যায়, বাংলাদেশে ড্রাগন ফল মূলত মে মাস  থেকে অক্টোবর মাস পর্যন্ত গাছে ধরে। শীত  মৌসুমে ড্রাগন ফল গাছে ধরে না। আলোর ভূমিকা ড্রাগন উৎপাদনে অপরিসীম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ও  বাংলাদেশে  কিছু কিছু এলাকায় বর্তমানে বৈদ্যুতিক আলোর ব্যবস্থা  করে  ড্রাগণ উৎপাদন হচ্ছে বছরব্যাপি। সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড এর স্বত্বাধিকার নাসির উদ্দিন সরকার বলেন, তিনিও বিদ্যুতায়িত করে  বছরব্যাপী ড্রাগন চাষের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন।

ফলের চাষ বাড়িয়ে জাতীয় পুষ্টি বৃদ্ধির সহায়ক ভূমিকায় সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেডে প্রাকৃতিক জৈব সার ব্যাবহার করে অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা দেশী-বিদেশী ফল ড্রাগন, ত্বীন, আজওয়া খেজুর, ভিয়েতনামী নারিকেল, এভোকাডো, শাওয়ারসপ, মাল্টা, বারোমাসী আম, সুদানী আতা, পেয়ারা, শরিফা, সবেদা, পেঁপে ও বিচিবহীন লেবুসহ সকল ধরনের কলমচারা ও ফল পাইকারী-খুচরা বিক্রয় করা হয়। যোগাযোগ : সিকোটেক্স এ্যাগ্রো লিমিটেড, সাদুল্যাপুর, বেলতলী বাজার, মতলব উত্তর, চাঁদপুর, মোবাইল : ০১৮৩৪০২৪৯৫০

Loading

শেয়ার করুন