২৪ বছরের বঞ্চনার ও বৈষম্যের অবসান চান কাউছার ভূঁইয়া

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি :  নিজের বাড়ি থেকে কাঠ বাঁশ সংগ্রহ করে দিনরাত কষ্ট করে গড়ে তোলা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে গত ২৪ বছর ধরে নিজেই নির্বাসিত। শিক্ষকতার মহান পেশায় নিজেকে বিলিয়ে দেয়ার মানসে বারং বার প্রতিষ্ঠানে আসতে চাইলে তাকে ঘড়যন্ত্র করে ভিড়তে দেয়নি কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা কমিটি ও প্রতিষ্ঠান প্রধানের ব্যক্তিগত আক্রোশ ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে তিনি এখনো দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। সর্বোচ্চ আদালতের রায় ও মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা উপেক্ষা করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে যোগদান করা থেকে বঞ্চিত করছে। হতভাগা এই শিক্ষকের নাম কাইছার আহমেদ ভূইয়া। চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার পশ্চিম লড়ুয়া কেরামতিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রাসার সিনিয়র সহকারি শিক্ষক তিনি। টানা তিনদিন ধরে মাদ্রাসায় শিক্ষা অধিদপ্তরের চিঠি নিয়ে মাদ্রাসায় যোগদান করার জন্য গেলেও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার কৌশলে মাদ্রাসা থেকে সটকে পড়ে তাকে বঞ্চিত করছেন।

নিজের ২৪ বছর ধরে বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথা বলতে গিয়ে কাউছার আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, ১৯৯৩ সালে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হলেও এমপিও ভুক্তির হিসেবে ১১/৭/১৯৯৪ সালে তিনি মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক এবং ২০০১ সালের অক্টোবর মাসে সিনিয়র সহকারি শিক্ষক হিসেবে পদোন্নতি পান। পরবর্তীতে তিনি বিএড স্কেল প্রাপ্ত হওয়ার পর মাদ্রাসা সুপারের অনৈতিক আর্থিক লেনদেন জের ধরে তৎকালিন প্রতিষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তার সাথে মামলায় জড়িয়ে পড়েন। মাদ্রাসা সুপার নিজের কুকর্ম ঢাকতে স্থানীয় কমিটি গঠন করে ১/১/২০০২ সাল থেকে তার বেতন ভাতাদি বন্ধ করে দেন। এক পর্যায়ে তাকে অসম্মান্বিত করে মাদ্রাসা থেকে বের করে দেন। এনিয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় ভাবে চেষ্টা তদবির চললেও তাকে কোন ভাবেই মাদ্রাসায় এসে শিক্ষকতা করতে এবং হাজিরা খাতায় সই দিতে দেয়া হয়নি। বাধ্য হয়ে তিনি ১/১১ সময়ে অর্থাৎ ৩০/৪/২০০৮ সালে প্রথমে জেলা প্রশাসক বরাবর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেন। প্রতিকার না পেয়ে তিনি চাঁদপুর দেওয়ানি আদালতে (১১/২০১০) মামলা দায়ের করেন।

আদালত তাকে বেতনভাতাদিসহ স্বপদে বহাল করার নিদের্শনা দেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে যুগ্ম জেলা জজ ১ম আদালত দেওয়ানি আপিল (৫/২০১৬) করলেও আদালত পুর্বের রায় বহাল রেখে আপিল (২৮/৩/২০১৯) খারিজ করে দেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে ওই সময়ের মাদ্রাসা সুপার আ: কাদের মহামান্য হাইকোর্ট ডিভিশনে সিভিল রিভিশন নং- ৩০৯৪ /২০১৯ দায়ের করেন। মহমান্য হাইকোর্ট বিভাগও ৩০/৯/২০২১ তারিখে প্রদেয় রায়ে পুর্বের রায় বহাল অর্থাৎ কাউছার আহমেদ ভূঁইয়াকে স্বপদে বহাল রাখার বিষয়ে পুর্বের সিদ্ধান্ত বহাল রাখেন। এরমধ্যে ওই রায়ের বিরুদ্ধে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করলেও আদালত ২০২২ সালের ২১ মার্চ নো অর্ডার দিয়ে আগের রায় বহাল রাখেন।

পরবর্তীতে ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের আইন শাখা-১ (স্মারক নং- ৫৭.০০.০০০০.০৪৬.০২.০০৩.২২.১৪৫) এর মাধ্যমে ১৫দিনের মধ্যে ডিজি ডিএমই’র মতামত প্রদানের জন্য বলেন। কিন্তু সেই মতামত দিতে ২ বছর সময় নেন কর্তৃপক্ষ। অবশেষে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুসারে চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের শিক্ষা শাখা চলতি বছরের ২৫জুলাই প্রদান করা চিঠিতে তাকে যোগদান করার বিষয়ে মাদ্রাসা সুপারকে নিদের্শনা দেয়।

কাউছার আহমেদ ভূঁইয়া বলেন, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ তাকে যোগদান করতে বাঁধা প্রদান করেন এবং উল্টো তার কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবী করে ব্যবস্থাপনা কমিটি। এরপর তিনি পুন:মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে আবেদন করলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অডিট ও আইন শাখা গত ১৩ আগস্ট চিঠির(স্মারক নং- ৫৭.২৫.০০০০.০০৫.১২.০৬৮.২৩) মাধ্যমে তাকে আবারো মাদ্রাসায় সহকারি শিক্ষক হিসেবে যোগদানের জন্য মাদ্রাসা সুপারকে নির্দেশনা দেন। কিন্তু গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে টানা তিন দিন মাদ্রাসায় যোগদান পত্র নিয়ে আসলেও মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ফয়েজ বক্স অসুস্থতার অজুহাত দেখিয়ে মাদ্রাসা থেকে সটকে পড়েন।

ফজলুর রহমান নামে একজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, তার সাথে একসাথেই কাউছার আহমেদ এই মাদ্রাসায় যোগদান করেন। এরপর ঝামেলা হলে তিনি আর আসেননি। পরবর্তীতে তিনি আাদালত ও মাদ্রাসা অধিদপ্তর থেকে পুর্নবহালের নির্দেশনা পেয়েছেন বলে শুনেছেন।

এব্যাপারে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার ফয়েজ বক্স বেশ কয়েকবার মুঠো পোন কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।

বুধ বার, ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায়

Loading

শেয়ার করুন