ফরিদগঞ্জে ইউপি সদস্যার ছেলের নেতৃত্বে হামলা

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি :
একদিকে সংরক্ষিত আসনের এক ইউপি সদস্যার বিরুদ্ধে ভাতার বই, নলকূপ দেয়ার নাম করে অর্থ আদায়ের অভিযোগ, অন্যদিকে তার ছেলের বিরুদ্ধে এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ফরিদগঞ্জ উপজেলায় সাবেক এক সেনা সদস্যের উপর কিশোর গ্যাংয়ের হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই ধরনের তথ্য উঠে এসেছে।

সরেজমিন ঘটনার বিষয়ে জানতে এলাকায় গেলে নানা তথ্য উঠে আসে। স্থানীয়রা জানায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া পাঠানোর পরিবারের সদস্যরা যেমন ধোয়া তুলসি পাতা নয়, তেমনি ইউপি সদস্যা সেলিনা আক্তার ও তার ছেলের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। তবে সর্বশেষ ঘটনায় ইউপি সদস্যা আচরণ এবং তার ছেলে মসজিদের সামনে হামলার ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ।

স্থানীয়রা জানায়, গত ৬ এপ্রিল ইফতারের পূর্ব সময়ে পাইকপাদা উত্তর ইউনিয়নের দক্ষিণ পাইকপাড়া গ্রামের বীরমুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া পাঠানের সন্তান ও সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর আলম পাঠানের স্ত্রীর সাথে পাশ^বতী বাড়ির ইউপি সদস্যা সেলিনা আক্তারের ঝগড়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইফতারের পর সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সার্জেন্ট জাহাঙ্গীর আলম বাড়ি ফেরার পথে ওই ঘটনার জের ধরে ইউপি সদস্যরা ছেলে ওমর তার কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের হাতে গুরুতর আহত হয়। গুরতর আহত হয় জাহাঙ্গীর পরে তাকে চাঁদপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এই বিষয়ে উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলেও পুলিশ তদন্ত শেষে জাহাঙ্গীর আলশ পাঠানের অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা নথি ভুক্ত করে।

সরেজমিন গেলে বীরমুক্তিযোদ্ধা বাদশা মিয়া পাঠান জানান, ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তারের সন্তানরা এলাকায় কিশোর গ্যাং হিসেবে পরিচিত। তারা নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত। আমার সন্তান জাহাঙ্গীর পাঠানের উপর হঠাৎ করেই হামলা করে গুরুতর আহত করে। আমি একজন বীরমুক্তিযোদ্ধা হিসেবে প্রশাসনের নিকট এগুলোর বিষয়ে কঠোর পদক্ষেপ দাবী করছি।

এদিকে সরেজমিন গেলে স্থানীয় মোবারক হোসেসেনর স্ত্রী প্রতিবন্ধী জেসমিন বেগম বলেন, ইউপি সদস্য সেলিনা বেগম তার কাছ থেকে ৪হাজার ৯শ পঞ্চাশ টাকা নিয়েছে ভাতা কার্ড করে দেওয়ার জন্য। বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাওলানা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন,আমি সেলিনা মেম্বারের কাছে ২০হাজার টাকা দিয়েছি ডিপ টিউবল দেওয়ার জন্য। কিন্তু আজ ৯ বছর পর হয়ে গেছে কিন্তু আমাকে ডিপটিউবল দিচ্ছে না। আহম্মদ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম বলেন, আমাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেওয়া জন্য সাড়ে ৪ হাজার টাকা দিয়েছি কিন্তু আজও আমার কার্ড করে দেয়নি।
একই বাড়ির বাবুল পাঠানের স্ত্রী রাসিদা বেগম ইউপি সদস্যার সেলিনা আক্তারের ছেলে ওমরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, আমার বুদ্ধি প্রতিবন্ধি মেয়ে তার যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে। পরে সে ১৫ হাজার টাকা দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করেছে। আমাকে মামলা না দেওয়া জন্য হুমকি দিয়েছিল। ঘটনাটি আগের হলেও এখনো আমি ভুলতে পারছি না। এলাকায় তার বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে এসসব বিষয়ে জানতে চাইলে ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তার বলেন, তাকে হয়রানি করার জন্য এসব কথা প্রচার করা হচ্ছে। আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা ঘটনা রটিয়ে আমাদের থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। তিনি পাল্টা অভিযোগ দিয়ে বলেন, আমাদেরকে রাস্তা দিয়ে বের হতে দেয়া না পাঠান পরিবারে সদস্যরা। ইতিপূর্বে তাদের অপকর্মের কারণে এলাকাবাসী তাদের থেকে মুচলেকা নিয়েছে। এখন তোন কিছুই না পেরে আমার সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে। এসময় তিনি গত ৬এপ্রিল তার ঘরে হামলার কথা জানান।

অন্যদিকে মুঠো ফোনে সেলিনা আক্তার জহির মাস্টারের আনিত অভিযোগ বিষয়ে বলেন, ’ আমি জহির মাস্টার যদি আমার কাছে কলের জন্য টাকা দিয়ে থাকে তা হলে তাকে বলবেন আমার কাছ থেকে কল নেওয়ার জন্য’।

অপরদিকে ঘটনার বিষয়ে জানতে ইউপি সদস্য সেলিনা আক্তারের ছেলে ওমর ফারুককে মুঠো ফোনে কল করলে সে জানায়, জাহাঙ্গীর পাঠান ও তার ছেলে তাদের ঘরে এসে তদের উপর হামলা করে। তবে স্থানীয়রা নিশ্চিত করেছে যে ঐ দিন সেলিনা মেম্বারের বাড়িতে কোন মারামারি হয় নাই।

গত ৬ এপ্রিল হামলার শিকার সেনা বাহিনীর সাবেক সদস্য জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কোন কারণ ছাড়াই অর্তকিতে সেলিনা আক্তারের ছেলে কিশোর গ্যাং এর লিডার ওমর তার লোকজন নিয়ে আমার ওমর হামলা করে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কিশোর গাংয়ের নেতৃত্ব দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

Loading

শেয়ার করুন