পাইলস বা ফিস্টুলার আতঙ্ক থেকে বাঁচতে হলে

পাইলস বা ফিস্টুলার আতঙ্ক থেকে বাঁচতে হলে আপনাকে জানতে হবে এবং মানতে হবে কিছু বিষয়। আমরা যা মানি না এবং জানি না তা জেনে নিতে হবে, এবং তা অনুসারে আপনার জীবনযাপন করতে হবে।

অনেকের ক্ষেত্রেই দেখা যায়, হজমের তেমন সমস্যা না থাকলেও হজমজাত বর্জ্য নিষ্কাশনের সময়ে কিন্তু তাঁদের বেশ বেগ পেতে হয়। মলত্যাগের প্রক্রিয়া মসৃণ হয় না। কোনও কোনও সময়ে তা হয়ে ওঠে যন্ত্রণাদায়ক। এই জাতীয় যে কোনও সমস্যাকেই হেমোরয়েডস বা সহজ ভাষায় পাইলসের গোত্রে ফেলে দেন অনেকে। কিন্তু আসলে হেমোরয়েডসের বিভিন্ন প্রকার হতে পারে, যার প্রত্যেকটির উপসর্গ কাছাকাছি হলেও চিকিৎসা আলাদা আলাদা। এখানে আমরা বিশেষ ভাবে চিনে নিতে চেষ্টা করব পাইলসের লক্ষণগুলি।

চিনে নিন ঠিক করে

পাইলসের লক্ষণগুলি অনেকেই হয়তো জানেন, নেপথ্যের কারণ নয়। দীর্ঘকালীন কোষ্ঠকাঠিন্যের রোগীদের পাইলসের সমস্যা দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। এ ছাড়া যাঁদের মলত্যাগের সময়ে অকারণ বেগ প্রদানের বদভ্যেস রয়েছে, তাঁরাও এই রোগ বাধিয়ে ফেলতে পারেন। মলদ্বারে ব্যথা বা মলত্যাগের সময়ে কাঁচা রক্ত পড়তে শুরু করলেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার। সাধারণ রোগীর পক্ষে পাইলস, ফিসার, ফিসচুলা ইত্যাদির মধ্যে পার্থক্য নিরূপণ করা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সম্ভব নয় । কারণ, প্রতিটিই পায়ুদ্বার সংক্রান্ত। উপসর্গও প্রায় একই ধরনের। প্রতিটির ক্ষেত্রেই বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা শুরু করতে হবে। আবার বেড়ে গেলে অস্ত্রোপচারও করাতে হতে পারে। সম্পূর্ণ নিরাময়ের পরেও কখনও কখনও ফিরে আসতে পারে তা।

পাইলসের ক্ষেত্রে অনেক সময়ে শুধু রক্তক্ষরণ হতে পারে, ব্যথা নয়। তবে মাত্রা বেড়ে গেলে পাইলস মলদ্বারের বাইরে বেরিয়ে আসে। এই বাইরে বেরিয়ে আসার লক্ষণটি ফার্স্ট ডিগ্রি পাইলসের ক্ষেত্রে দেখা যায় না। এটি অসুখের একেবারে প্রাথমিক পর্যায়। সেকেন্ড ডিগ্রি পাইলসে মলত্যাগ করার সময়েই শুধু লাম্প বেরিয়ে আসে। থার্ড বা ফোর্থ ডিগ্রির ক্ষেত্রে অপারেশন ছাড়া খুব বেশি রাস্তা খোলা থাকে না। আবার থ্রম্ব্রোজ়ড হেমোরয়েডসের ক্ষেত্রে রক্তনালী আক্রান্ত হয়। ব্যথার মাত্রাও বেশি।

সাবধানের মার নেই

বিশেষজ্ঞের মতে, মানুষ যেহেতু দু’পেয়ে প্রাণী, তাই অভিকর্ষের প্রভাবে শরীরের অভ্যন্তরীণ নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে এমনিই টান পড়ে। পাইলসের ভয় থেকে মুক্ত থাকার জন্য খেয়াল রাখা উচিত, যাতে মল কিছুতেই শক্ত না হয়। এর জন্য ফাইবার সমৃদ্ধ ডায়েট অনুসরণ করা প্রয়োজন। জলও প্রচুর পরিমাণে খাওয়া দরকার, যাতে মলের প্রকৃতি নরম থাকে। মলত্যাগের অভ্যেস যেন মসৃণ হয়। অর্থাৎ ক্রনিক কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া থাকলে, তা সারিয়ে তোলা দরকার। মলত্যাগের সময়ে অতিরিক্ত চাপ দেওয়ার অভ্যেসও বন্ধ করতে হবে। তবে এ ছাড়াও অনেক সময়ে অতিরিক্ত মেদবৃদ্ধি, ভারী জিনিস তোলা বা গর্ভাবস্থার কারণেও পাইলসের শিকার হতে পারেন।

উপসর্গের কথা

সাধারণত হেমোরয়েডসের উপসর্গ বাহ্যিক ও অভ্যন্তরীণ, দু’ভাবেই প্রকট হয়ে ওঠে। আলাদা ভাবে হোক কিংবা একসঙ্গে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এর চিকিৎসাও দেরি করে শুরু করার প্রবণতা দেখা যায়। পায়ুদ্বারের বিভিন্ন অসুখের ক্ষেত্রে উপসর্গ পৃথক। পাইলস এদের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত অসুখ। এর মূল লক্ষণগুলি হল—

• পায়ুদ্বারকে ঘিরে শক্ত, যন্ত্রণাদায়ক লাম্প অনুভূত হবে প্রথম দিকে।

• মলত্যাগের সময়ে কাঁচা রক্ত পড়বে, সঙ্গে ব্যথা। অনেক সময়ে ব্যথা না-ও হতে পারে।

• মলদ্বারের ভিতরের লাইনিংয়ে চাপ এবং প্রদাহজনিত কারণে তা কালচে রক্তাভ দেখাবে। সংক্রমণের ভয়ও থাকে।

• অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে অ্যানিমিয়ার লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

প্রতিকারের উপায়

এ ধরনের অসুখের ক্ষেত্রে অনেকেই চেপে যান প্রথমে, যা অসুখের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয়। পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও সমস্যা হলে নিম্নে বর্ণিত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন।  চিকিৎসক রোগ নির্ণয় করে প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসা শুরু করতে পারেন।

প্রথম পর্যায়ে খাওয়ার ঔষধ,  মলম সেবন ও ব্যবহার  রোগ নিরাময় করা সম্ভব।

অসুখের মাত্রা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে চলে গেলে অবশ্য শল্যচিকিৎসা বা অপারেশন ছাড়া উপায় নেই। আবার ভুলভাল যায়গায় বা ভুল ব্যক্তির কাছে অপারেশন হলে সমস্যা আরো বেড়ে যায়, পূঁজ পড়ে, রক্ত পড়ে, ব্যথা হয়। বার বার অপারেশন করতে হয়।

বদলে ফেলুন লাইফস্টাইল

পাইলস বা পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও অসুখের জন্য পরোক্ষ ভাবে দায়ী অনিয়মিত লাইফস্টাইলও। ডায়েটে যেমন ফাইবারযুক্ত ফল, সবুজ আনাজপাতি, তুষযুক্ত দানাশস্য বেশি করে রাখতে হবে, তেমনই জল খাওয়ার অভ্যেসও বাড়াতে হবে। এড়িয়ে চলতে হবে ক্যাফিন জাতীয় পানীয়, তেল-ঝাল মশলাযুক্ত রান্না। পাইলসের রোগীদের পক্ষে শুকনো লঙ্কা বিষতুল্য। ভারী জিনিস তোলাও কিন্তু বারণ।

পায়ুদ্বার সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে কখনও কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় ওবেসিটি। মেদবৃদ্ধির কারণেও হেমোরয়েডসের সমস্যা তৈরি হতে পারে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা ও এক্সারসাইজ়ের মাধ্যমে মলত্যাগের অভ্যেস নিয়মিত করে তুলতে পরামর্শ নিন নিম্নে বর্ণিত চিকিৎসকের।

পায়ুদ্বারে রক্তক্ষরণের সমস্যা সমূল নিরাময় না হলে তা ডেকে আনতে পারে রক্তাল্পতার মতো অসুখও। তাই নিয়ন্ত্রিত জীবনচর্যা আর ব্যালান্সড ডায়েটের মাধ্যমে মলত্যাগের সুঅভ্যেস গড়ে তুললেই প্রতিহত করা যায় পায়ুদ্বার সংক্রান্ত যে কোনও অসুখ। মলত্যাগের তৃপ্তি যেন আতঙ্কে পরিণত না হয়, তা সুনিশ্চিত করুন আগেভাগেই।

সারাদেশে অত্যন্ত বিশ্বস্ততার সাথে কুরিয়ার যোগে অর্ডার অনুযায়ী ঔষধ পাঠানো হয়। বিস্তারিত জানতে যোগাযোগ করুন।

Hakim Mizanur Rahman, Mobile. 01762240650

আমরা খবরের বস্তুনিষ্ঠতায় বিশ্বাসী, সঠিক সংবাদ পরিবেশনই আমাদের বৈশিষ্ট্য

আপডেট সময় : ০১:৪২ পিএম

২৯ নভেম্বর ২০২০ খ্রি. ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪২৭ বঙ্গাব্দ, ১৩ রবিউস সানি ১৪৪২ হিজরি, রোববার

Loading

শেয়ার করুন