রোগমুক্ত থাকার সহজ ২০ উপায়
![](https://chandpurreport.com/wp-content/uploads/2024/02/2.gif)
সুস্থ, সবল ও রোগমুক্ত জীবনধারণ করতে কে না চায়? সুস্বাস্থ্য হলো আশীর্বাদ। যার শরীরে অসুখ বাসা বেঁধেছে; তিনিই সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব অনুধাবন করতে পারেন। নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে সুস্বাস্থ্য অর্জন করা সম্ভব। কিন্তু বলা বা মনে ধারণ করা যতটা সহজ, নিয়মিত পালন করা মোটেই ততটা সহজ নয়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের জন্য একনিষ্ঠ প্রচেষ্টা, সুস্বাস্থ্য সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ তথ্য এবং পরিপূর্ণ সচেতনতার সমন্বয় খুব জরুরি।
![](https://chandpurreport.com/wp-content/uploads/2024/01/diabeties.jpg)
সুস্বাস্থ্যের জন্য কিছু নিয়ম-কানুন মানা জরুরি। যেমন-
১. রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ুন। অকারণে মোটেও রাত জাগবেন না। ঘুমানোর একঘণ্টা আগেই মোবাইল, ল্যাপটপ, টেলিভিশন থেকে দূরে থাকুন। সকালে তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পড়ুন। দেখবেন, নতুন উদ্যমে দিনের কাজ শুরু করতে পারছেন।
২. প্রাত্যহিক কাজের পাশাপাশি নিজ নিজ ধর্মানুযায়ী সৃষ্টিকর্তাকে স্মরণ করুন। আপনি প্রচুর মানসিক প্রশান্তি পাবেন। পাশাপাশি কিছুটা মানসিক চাপমুক্ত জীবনযাপনেও সহায়ক হবে।
৩. খাওয়ার আগে, মল-মূত্র ত্যাগের পর সঠিক নিয়মে সাবান ও পানি দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করুন। আঙুলের খাঁজে, নখের ভেতরে যেন কোনোভাবেই ময়লা না জমে থাকে; সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
৪. সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং রাতে খাবারের পর দিনে কমপক্ষে ২ বার নিয়মিত সঠিক নিয়মে দাঁত ব্রাশ করুন।
৫. সময় পেলেই হাঁটার অভ্যাস করুন। হেঁটে যাওয়া যায় এমন দূরত্বে রিকশা বা গাড়ির পরিবর্তে হেঁটে যাওয়ার অভ্যাস করুন। যখন অবসর সময় পাবেন; তখন পার্কে বা ফুটপাতে হাঁটুন। ধীরে ধীরে হাঁটার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন।
৬. স্বাস্থ্যসম্মত আহার করুন। প্রাকৃতিক খাদ্যগ্রহণে বিশেষভাবে নজর দিন। দৈনন্দিন খাদ্যাভাসে টাটকা ও মৌসুমী শাক-সবজি, ফল-মূল সংযুক্ত করুন। পরিমিত পরিমাণে ভাত বা রুটি খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করুন। একবারে একসাথে বেশি পরিমাণ খাদ্যগ্রহণ না করে অল্প অল্প করে বারবার পরিমিত খাদ্যগ্রহণের চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে পরিবারের সব সদস্য একসাথে খাবার গ্রহণ করুন, পারিবারিক বন্ধনটাও দৃঢ় হবে।
৭. ঘুম থেকে উঠে প্রতিদিন একগ্লাস পানি পান করুন। পাশাপাশি সারাদিনে মোটামুটি ২-৩ লিটার পানি পানের চেষ্টা করুন। আপনার বৃক্ক সঠিকভাবে কর্মক্ষম থাকার পাশাপাশি ত্বকের লাবণ্য বাড়বে।
৮. অত্যধিক মসলাযুক্ত খাবার ও অধিক চর্বিযুক্ত লাল মাংস এড়িয়ে চলুন। পরিবর্তে টার্কি বা মুরগির মত কম চর্বিবিশিষ্ট মাংস খাদ্যাভাসে নির্বাচন করতে পারেন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, ফাস্টফুড, বাইরের খোলা ও অস্বাস্থ্যকর খাবার প্রভৃতি যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন।
৯. ধূমপান ও মদপানসহ অন্যান্য খারাপ অভ্যাস এড়িয়ে চলুন। এগুলো এড়িয়ে চললে আপনার ফুসফুস ও লিভার দুটোই ভালো থাকবে। সেইসাথে সুস্থ জীবনযাপনের পাশাপাশি টাকাও বাঁচবে।
১০. শারীরিক কার্যক্রম বাড়ান। হতে পারে তা সাঁতার কাটা বা সাইকেল চালানো। কিন্তু এ কাজগুলোই আপনাকে মানসিক ক্লান্তি থেকে মুক্তি দেবে।
১১. যেকোনো বিষয় নিয়ে পড়ুন। হতে পারে সেটা গল্পের বই বা ম্যাগাজিন। এগুলো মস্তিষ্কের জন্য উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে।
১২. খুব বেশি কাজের চাপ অনুভব করলে নিয়মিত বিরতিতে ছুটি নিন। জীবন শুধু মুখ বুজে মাথা নিচু করে কাজ করার জন্য নয়। ছুটি শেষে পূর্ণোদ্যমে কাজে মনোনিবেশ করুন।
১৩. নেতিবাচক চিন্তা না করে সবসময় ইতিবাচক থাকুন। ঝামেলাযুক্ত কোনো সম্পর্ক থাকলে ইতি টানুন। পারিবারিক ও পেশাগত কাজের বাইরে এমন কোনো নতুন শখ তৈরি করুন, যা করতে আপনার ভালো লাগে।
১৪. হাঁচি-কাশি দেওয়ার সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন। রুমাল বা টিস্যুপেপার ব্যবহার করুন। কোনো অবস্থাতেই হাত দিয়ে নাক মুছবেন না। বাইরে জনসমাগমযুক্ত স্থানে মাস্ক ব্যবহার করুন। সেইসাথে অকারণে কান খোঁচাবেন না।
১৫. কখনো অসুস্থ হলে রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ওষুধ-পথ্য সেবন করবেন না।
১৬. উত্তম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন
শরীর এবং দাঁত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য ব্যবহৃত জিনিসপত্র
মেয়ো ক্লিনিকের মতে, “অসুস্থতা এবং রোগ সংক্রমণ এড়ানোর সবচেয়ে ভালো একটা উপায়” হল, হাত ধোয়া। সর্দিকাশি হওয়ার প্রধান কারণ হচ্ছে, হাতে জীবাণু থাকা অবস্থায় নাক বা চোখ ঘষা। এই ধরনের জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হল, নিয়মিতভাবে হাত ধোয়া। উত্তম স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে বিভিন্ন মারাত্মক রোগের সংক্রমণও এড়ানো যায় যেমন, নিউমোনিয়া এবং ডায়েরিয়া। এই ধরনের রোগের কারণে প্রতি বছর কুড়ি লক্ষেরও বেশি শিশু মারা যায়, যাদের বয়স পাঁচ বছরের নীচে। হাত ধোয়ার মতো সাধারণ অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে এমনকী মারাত্মক ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণের হার কমানো যেতে পারে।
বিশেষভাবে নির্দিষ্ট কিছু সময়ে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যাতে আপনি নিজেকে ও অন্যদের সুস্থ রাখতে পারেন। মূলত এই সময়গুলোতে হাত ধোয়া উচিত:
টয়লেট ব্যবহার করার পরে।
বাচ্চাদের ডায়াপার বদলানোর পর অথবা তাদের টয়লেট করানোর পরে।
ক্ষতস্থান অথবা কাটা জায়গা পরিষ্কার করে ওষুধ লাগানোর আগে এবং পরে।
কোনো অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়ার আগে এবং পরে।
খাবার প্রস্তুত করার, তা পরিবেশন করার অথবা খাওয়ার আগে।
হাঁচি দেওয়ার, কাশি দেওয়ার এবং নাক ঝাড়ার পরে।
কোনো পশুর গায়ে হাত দেওয়ার অথবা তাদের মল-মূত্র পরিষ্কার করার পরে।
আবর্জনা পরিষ্কার করার পরে।
আর সঠিকভাবে হাত ধোয়ার বিষয়টাকে হালকাভাবে নেবেন না। গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, পাবলিক টয়লেট ব্যবহার করে এমন ব্যক্তিদের মধ্যে অধিকাংশই পরে হাত ধোয় না অথবা ধুলেও, সঠিকভাবে ধোয় না। কীভাবে হাত ধোয়া উচিত?
পরিষ্কার জলের নীচে হাত ভেজান এবং সাবান লাগান।
দু-হাত ঘষে ফেনা তৈরি করুন ও সেইসঙ্গে অবশ্যই নখ, বৃদ্ধাঙ্গুল, হাতের পিছন দিক এবং আঙুলের মাঝের জায়গা পরিষ্কার করুন।
অন্ততপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ঘষুন।
পরিষ্কার জলের নীচে হাত ধোন।
কোনো পরিষ্কার তোয়ালে দিয়ে হাত মুছুন।
যদিও এই বিষয়গুলো খুবই সাধারণ কিন্তু এগুলো অসুস্থতার হাত থেকে রক্ষা করার এবং জীবন বাঁচানোর ক্ষেত্রে অত্যন্ত কার্যকরী।
১৭. বিশুদ্ধ জল ব্যবহার করুন
এক গ্লাস বিশুদ্ধ জল এবং কয়েক টুকরো লেবু
কিছু কিছু দেশে পরিবারের জন্য বিশুদ্ধ জল সরবরাহ করা রোজকার বিষয়। কিন্তু, পৃথিবীর যেকোনো জায়গায়ই বিশুদ্ধ জল পাওয়া সেই সময় কঠিন হয়ে উঠতে পারে, যখন বন্যা, ঝড়, পাইপ ভেঙে যাওয়া অথবা অন্যান্য কারণে জলের প্রধান উৎস দূষিত হয়ে পড়ে। জলের উৎস যদি নিরাপদ না হয় এবং জল সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে রাখা না হয়, তা হলে এতে রোগজীবাণু জন্মাতে পারে ও সেইসঙ্গে কলেরা, প্রাণনাশক ডায়েরিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এবং অন্যান্য সংক্রামক রোগ হতে পারে। একটা পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রতি বছর ১৭০ কোটি লোক ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয় আর এর একটা প্রধান কারণ হল, দূষিত জল পান করা।
সহজেই অসুস্থ না হওয়ার অথবা অসুস্থতা রোধ করার জন্য আপনি অনেক কিছু করতে পারেন
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসুস্থ ব্যক্তির মলের দ্বারা দূষিত জল ও খাবার খাওয়ার কারণে কলেরা হয়ে থাকে। এই ধরনের এবং অন্যান্য জল দূষণ থেকে নিজেকে রক্ষা করার জন্য আপনি কোন পদক্ষেপগুলো নিতে পারেন, এমনকী তা যদি কোনো দুর্যোগের ঠিক পরেও হয়ে থাকে?
লক্ষ রাখুন যাতে পানীয় জল ও সেইসঙ্গে দাঁত ব্রাশ করার, আইস কিউব তৈরি করার, খাবার ও বাসনপত্র ধোয়ার অথবা রান্না করার জল নিরাপদ উৎস থেকে আসে; সেই উৎস হতে পারে জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য সরবরাহকৃত ভালোভাবে পরিশোধিত জল অথবা নির্ভরযোগ্য কোম্পানির দ্বারা সরবরাহকৃত সিল করা বোতল।
কোনোভাবে যদি পাইপের জল দূষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তা হলে সেই জল ব্যবহার করার আগে ফুটিয়ে নিন অথবা উপযুক্ত কেমিক্যাল ব্যবহার করে জল পরিশোধন করে নিন।
বিভিন্ন কেমিক্যাল যেমন, ক্লোরিন অথবা জল পরিশোধক ট্যাবলেট ব্যবহার করার সময় প্রস্তুতকারী সংস্থার নির্দেশনা ভালোভাবে পড়ে তা অনুসরণ করুন।
গুণগত মানসম্পন্ন জলের ফিলটার ব্যবহার করুন, যদি তা সহজেই পাওয়া যায় এবং কেনার সামর্থ্য থাকে।
এমনকী জল পরিশোধন করার কেমিক্যালও যদি পাওয়া না যায়, তা হলে ঘরে ব্যবহারযোগ্য ব্লিচ ব্যবহার করুন, ১ লিটার জলে দু-ফোঁটা (১ গ্যালন জলে আট ফোঁটা) ব্লিচ ভালোভাবে মিশিয়ে ৩০ মিনিট রেখে দিন এবং এরপর ব্যবহার করুন।
পরিশোধিত জল সবসময় পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে রাখুন, যাতে তা আবারও দূষিত হয়ে না যায়।
লক্ষ রাখুন যাতে জল তোলার পাত্র পরিষ্কার থাকে।
পরিষ্কার হাতে জলের পাত্র ব্যবহার করুন এবং জল তোলার সময় হাত ও আঙুল জলের মধ্যে ডোবাবেন না।
১৮. খাবারের প্রতি খেয়াল রাখুন
বিভিন্ন প্রকারের পুষ্টিকর খাবার
পুষ্টি ছাড়া ভালো স্বাস্থ্য সম্ভব নয় আর পুষ্টি লাভ করার জন্য স্বাস্থ্যকর, সুষম খাবার প্রয়োজন। আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে লবণ, চর্বি ও শর্করাযুক্ত খাবার থাকতে হবে, তবে লক্ষ রাখবেন যেন তা অতিরিক্ত হয়ে না যায়। এই তালিকার মধ্যে যেন ফলমূল ও শাকসবজিও থাকে আর খাবারে যেন বৈচিত্র্য থাকে। পাউরুটি, সিরিয়াল, পাস্তা অথবা চাল কেনার সময় প্যাকেটের গায়ে লেখা উপকরণের তালিকা দেখে নিন, যাতে আপনি ভুসিযুক্ত খাবার বেছে নিতে পারেন। ভুসি ছাড়ানো শস্য থেকে তৈরি খাবারের বিপরীতে এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি ও ফাইবার থাকে। প্রোটিন পাওয়ার জন্য অল্প পরিমাণ এবং কম চর্বিযুক্ত মাংস খান আর সপ্তাহে অন্ততপক্ষে কয়েক বার মাছ খাওয়ার চেষ্টা করুন। কিছু দেশে উদ্ভিদ থেকে প্রস্তুত এমন প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার পাওয়া যায়।
আপনি যদি শর্করা-জাতীয় খাবার এবং প্রচুর চর্বি রয়েছে এমন খাবার খুব বেশি খান, তা হলে আপনি অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকির মুখে রয়েছেন। এই ঝুঁকি কমানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে শর্করা রয়েছে, এমন পানীয়ের পরিবর্তে জল খান। শর্করা-জাতীয় ডেজার্টের পরিবর্তে বেশি করে ফল খান। যে-খাবারগুলোতে প্রচুর চর্বি রয়েছে সেগুলো কম খান, যেমন সসেজ, মাংস, মাখন, কেক, চিজ ও কুকিজ। আর রান্নার জন্য মাখন অথবা ঘি ব্যবহার করার পরিবর্তে, স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো এমন তেল ব্যবহার করুন।
আপনার খাদ্য তালিকার মধ্যে যদি এমন খাবার থাকে, যেগুলোতে অতিরিক্ত লবণ বা সোডিয়াম রয়েছে, তা হলে সেটা আপনার রক্তচাপ মাত্রাতিরিক্ত বাড়িয়ে দিতে পারে। আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে, তা হলে সোডিয়ামের মাত্রা কমানোর জন্য প্যাকেটজাত খাবারের গায়ে উপকরণের তালিকা দেখে নিন। স্বাদ বৃদ্ধির জন্য লবণের পরিবর্তে বিভিন্ন পাতা বা মশলা ব্যবহার করুন।
আপনি কী খান, সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, এর পাশাপাশি আপনি কতটা খান, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাই, খাওয়ার সময় খিদে শেষ হয়ে গেলেও খেতে থাকবেন না।
পুষ্টির সঙ্গে ফুড পয়জনিংয়ের বিষয়টাও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। যেকোনো খাবারেই আপনার ফুড পয়জনিং হতে পারে, যদি তা ভালোভাবে তৈরি করা ও সংরক্ষণ করা না হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা-র (WHO) রিপোর্ট অনুসারে এইরকম খাবার খাওয়ার কারণে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ লোক অসুস্থ হয়। যদিও অনেকে এগুলোর দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর প্রভাব কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হয়, কিন্তু এগুলোর ফলে কেউ কেউ তাদের প্রাণ হারায়। এই ঝুঁকি কমানোর জন্য আপনি কী করতে পারেন?
শাকসবজিতে হয়তো সার দেওয়া থাকতে পারে, তাই সেগুলো ব্যবহার করার আগে ভালো করে ধুয়ে নিন।
প্রতিটা খাবার তৈরি করার আগে আপনার হাত, কাটিং বোর্ড, কাটার যন্ত্রপাতি, বাসনপত্র এবং রান্নাঘরের উপরিভাগের মেঝে গরম জল ও সাবান দিয়ে ধুয়ে নিন।
খাবার যাতে আবারও দূষিত না হয়ে পড়ে, তাই কখনোই এমন কোনো জায়গায় অথবা পাত্রে খাবার রাখবেন না, যেখানে আগে কাঁচা ডিম, মাংস অথবা মাছ রাখা হয়েছিল। এইরকম কোনো জায়গা বা পাত্র ব্যবহার করার আগে তা ধুয়ে নিন।
সঠিক তাপমাত্রায় না পৌঁছানো পর্যন্ত খাবার রান্না করুন এবং সহজেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে, এমন যেকোনো খাবার সঙ্গেসঙ্গে না খেলে তাড়াতাড়ি তা ফ্রিজে রাখুন।
ঘরের তাপমাত্রা যদি ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরে থাকে, তা হলে সেখানে সহজেই নষ্ট হয়ে যায় এমন খাবার এক বা দু-ঘন্টার বেশি সময় থাকলে, সেটা ফেলে দিন।
১৯. শারীরিক পরিশ্রম করুন
একটা ফুটবল এবং ফুটবল খেলার জুতো
আপনার বয়স যা-ই হোক না কেন, সুস্থ থাকার জন্য নিয়মিতভাবে শারীরিক পরিশ্রম করা প্রয়োজন। আজকাল লোকে যথেষ্ট ব্যায়াম করে না। ব্যায়াম করা কেন গুরুত্বপূর্ণ? শারীরিক পরিশ্রম করা আপনাকে এই বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সাহায্য করবে:
ভালোভাবে ঘুমাতে পারবেন।
সচল থাকবেন।
মজবুত হাড় এবং শক্তিশালী পেশি গড়ে তুলতে পারবেন।
ওজন ঠিক রাখতে অথবা ওজন সঠিক মাত্রায় নিয়ে আসতে পারবেন।
বিষণ্ণতা রোগের ঝুঁকি কমাতে পারবেন।
অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে পারবেন।
আপনি যদি শারীরিক পরিশ্রম না করেন, তা হলে আপনার হয়তো এই বিষয়গুলো হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে:
হার্টের রোগ।
টাইপ ২ ডায়াবেটিস।
উচ্চ রক্তচাপ।
হাই কোলেস্টেরল।
স্ট্রোক।
কোন ধরনের শরীরচর্চা আপনার জন্য উপযুক্ত, সেটা যেহেতু আপনার বয়স এবং স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে, তাই কোনো নতুন ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া বিজ্ঞতার কাজ। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতে, ছোটো ছেলে-মেয়ে এবং কিশোর-কিশোরীদের প্রতিদিন অন্ততপক্ষে ৬০ মিনিট হালকা থেকে শুরু করে ভারী ব্যায়াম করা উচিত। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের প্রতি সপ্তাহে ১৫০ মিনিট হালকা ব্যায়াম অথবা ৭৫ মিনিট ভারী ব্যায়াম করা উচিত।
আপনি করতে উপভোগ করেন এমন বিষয় বেছে নিন। আপনি হয়তো এই বিষয়গুলো করতে পারেন, যেমন বাস্কেটবল, টেনিস ও ফুটবল খেলা, জোরে হাঁটা, সাইকেল চালানো, বাগান করা, কাঠ কাটা, সাঁতার কাটা, নৌকা চালানো, জগিং করা অথবা অন্যান্য এয়ারোবিক্স করা। কোনটা হালকা ব্যায়াম অথবা কোনটা ভারী ব্যায়াম, সেটা আপনি কীভাবে নির্ধারণ করতে পারেন? সাধারণত হালকা ব্যায়াম করার সময় আপনার ঘাম হবে কিন্তু ভারী ব্যায়াম করার সময় আপনি কথা বলতে পারবেন না।
২০. পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান
নিরিবিলি ও আরামদায়ক এক বেডরুম
কার কতটা ঘুমের প্রয়োজন, সেটা ব্যক্তি-বিশেষের উপর নির্ভর করে। অধিকাংশ নবজাত শিশু দিনে ১৬ থেকে ১৮ ঘন্টা ঘুমায়; ১-৩ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা প্রায় ১৪ ঘন্টা এবং ৩-৪ বছর বয়সি ছেলে-মেয়েরা প্রায় ১১ অথবা ১২ ঘন্টা ঘুমায়। স্কুলে যায় এমন ছেলে-মেয়েদের অন্ততপক্ষে ১০ ঘন্টা, কিশোর-কিশোরীদের প্রায় ৯ অথবা ১০ ঘন্টা এবং প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো প্রয়োজন।
পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই কারণগুলোর জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো প্রয়োজন:
ছোটো ছেলে-মেয়ে এবং কিশোর-কিশোরীদের বৃদ্ধি ও বিকাশ।
নতুন তথ্য জানা ও তা মনে করে রাখা।
হরমোনের সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা, যা বিপাকক্রিয়ায় ও ওজনের উপর প্রভাব ফেলে।
হার্ট ভালো রাখা।
রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি।
পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমালে স্থূলতা, বিষণ্ণতা, হার্টের রোগ, ডায়াবেটিস এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। নিশ্চিতভাবেই, এই বিষয়গুলোর জন্য আমাদের যথেষ্ট পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার উত্তম কারণ রয়েছে।
তাই, আপনি যদি বুঝতে পারেন যে, আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাচ্ছেন না, তা হলে কী করতে পারেন?
প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন।
আপনার বেডরুমের পরিবেশ যেন নিরিবিলি, অন্ধকার ও আরামদায়ক থাকে এবং রুমের তাপমাত্রা যেন খুব বেশি বা খুব কম না হয়।
বিছানায় শুয়ে টেলিভিশন দেখবেন না অথবা ইলেকট্রনিক গ্যাজেট ব্যবহার করবেন না।
আপনার বিছানা যেন যতটা সম্ভব আরামদায়ক হয়।
ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভারী খাবার, ক্যাফেইনযুক্ত খাবার অথবা মদ্য-জাতীয় পানীয় খাবেন না।
এই পরামর্শগুলো কাজে লাগানোর পরও আপনি যদি অনিদ্রা রোগে ভোগেন অথবা আপনার ঘুমের অন্যান্য সমস্যা হয়, যেমন দিনে অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া অথবা ঘুমানোর সময় শ্বাসকষ্ট হওয়া, তা হলে আপনি উপযুক্ত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।
স্বাস্থ্যের যত্ন নিন!
আপনার স্বাস্থ্য এমন বিষয়গুলোর দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, যেগুলোর উপর আপনার কোনো হাত নেই, যেমন আর্থিক অবস্থা, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া বা না পাওয়া, ইত্যাদি। কিন্তু, পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, এই প্রবন্ধে তুলে ধরা পরামর্শগুলোর মধ্যে অন্ততপক্ষে কিছু পরামর্শ আপনি কাজে লাগাতে পারেন। এই বিষয়টাকে প্রাচীন কালের একজন বিজ্ঞ ব্যক্তি এভাবে বলেন: “সতর্ক লোক বিপদ দেখিয়া আপনাকে লুকায়।”—হিতোপদেশ ২২:৩.
বাইবেলের এই বিশ্বাসযোগ্য প্রতিজ্ঞা পড়ার মাধ্যমে অনেকে সান্ত্বনা লাভ করে যে, শীঘ্র এমন এক সময় আসবে, যখন “নগরবাসী কেহ বলিবে না, আমি পীড়িত।” (যিশাইয় ৩৩:২৪)* সেই সময় না আসা পর্যন্ত নিজের এবং প্রিয়জনদের স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়ার জন্য যথাসাধ্য করুন। ▪
রোগীর অবস্থা শুনে ও দেখে সারাদেশের যে কোনো জেলায় বিশ্বস্ততার সাথে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।
ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :
হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)
(শতভাগ বিশ্বস্ত ও প্রতারণামুক্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান)
ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার
হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
যোগাযোগ করুন : (সকাল ১০টা থেকে রাত ০৮ টা (নামাজের সময় ব্যতীত)
01960-288007
01762-240650
01834-880825
01777-988889 (Imo/whats-app)
শ্বেতী রোগ, যৌন রোগ, ডায়াবেটিস,অশ্ব (গেজ, পাইলস, ফিস্টুলা),ব্লকেজ, শ্বেতপ্রদর, রক্তপ্রদর , আলসার, টিউমার, বাত-ব্যথা, দাউদ-একজিমা ইত্যাদি রোগের চিকিৎসা দেয়া হয়।
![](https://chandpurreport.com/wp-content/uploads/2024/01/hakim-mizanur-rahman.jpg)
![](https://chandpurreport.com/wp-content/uploads/2024/02/3.gif)