ফরিদগঞ্জে ইউপি সচিবকে পেটালেন চেয়ারম্যান

ফরিদগঞ্জ প্রতিনিধি:
চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের নানা অনিয়মে বাধা দেয়ায় সচিবকে পেটালেন চেয়ারম্যান। উপজেলার চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদে রবিবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে ওই এলাকায় উত্তেজনা ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।

সরেজমিনে জানা যায়, চরদুঃখিয়া পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার ও ইউপি সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসান’র পরিষদের দাপ্তরিক কর্মকাণ্ড নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ বিরোধ চলছে।

সচিবের দাবী, সরকারের আইনকানুনের তোয়াক্কা না করে চেয়ারম্যান মনগড়াভাবে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনা করেন।

চেয়ারম্যানের দাবী, সচিব দাপ্তরিক কাজে চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করছেন।

ঘটনারদিন রবিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে বিভিন্ন অনিয়মের বিষয়ে চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে একটি বৈঠক করেন চেয়ারম্যান,সচিব, ইউপি সদস্য ও হিসেবসহকারী সহ অন্যান্যরা। এ সময় চেয়ারম্যান ও সচিবের তর্ক-বিতর্ক বাঁধে। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসানকে চর-থাপ্পর দেন।

ভুক্তভোগী সচিব মো. ইমাম হোসেন হাসান বলেন, প্রায় দু’বছর পূর্বে মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার নির্বাচিত হয়েছেন। শপথ গ্রহণের পরিষদের দায়িত্বভার গ্রহণেরপর থেকে তিনি অনিয়ম দূর্নীতি শুরু করেন। তিনি ঠিকমত সরকারের ট্যাক্স রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেছেন। চেয়ারম্যানকে বারংবার এ সব বিষয়ে বল্লেও তিনি তোয়াক্কা করছেন না। চেয়ারম্যানের নিজস্ব লোক দিয়ে বেআইনীভাবে পরিষদ পরিচালনা করেন। ঘটনারদিন রবিবার (১০অক্টোবর) দুপুরে পরিষদের ১২ প্রকারের সমস্যা নিয়ে বৈঠকে বসি আমরা। এ সময় সরকারের নিয়ম অনুযায়ী রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ট্যাক্সসহ অন্যান্য ফি পরিষদের কথা বললে চেয়ারম্যান আমাকে প্রথমে লাঞ্ছিত করেন, লাঞ্ছিতের প্রতিবাদ করলে আমাকে চর-থাপ্পর দেন। আমি এ ঘটনার সঠিক বিচার চাই। আমি উর্ধ্বতন কর্ত্পক্ষের কাছে অভিযোগ দায়ের করার প্রস্তুতি নিচ্ছি।

নামপ্রকাশ্যে অনিচ্ছুক ইউপি সদস্য ও স্থানীয়বাসিন্দারা বলেন, চেয়ারম্যান নিজস্ব বাহিনী দিয়ে পরিষদ পরিচালনা করেন। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা নেই, চেয়ারম্যানের আত্মীয় স্বজন দিয়ে জন্ম -মৃত্যুসনদ ও প্রত্যয়নসহ অন্যান্য কাজ করছেন। যা সরকারি নির্ধারিত ফি থেকে প্রায় কয়েকগুণ বেশি, আমরা চাই প্রশাসন সঠিক তদন্ত বরে ব্যবস্থা নিবে।

বিষয়টি নিয়ে ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একই ইউনিয়ন পরিষদের হিসেব সহকারী মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, চেয়ারম্যান সাহেব মনগড়া ভাবে পরিষদ পরিচালনা করেন। বৈঠক চলাকালে চেয়ারম্যান মহোদয় সচিব সাহেবের গালে চর-থাপ্পর মারেন। এ ঘটনায় আমরা হতবাক হয়েছি।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহাজাহান মাস্টার বলেন, আমি পরিষদের দায়িত্বগ্রহণের পর থেকে সচিব আমাকে দাপ্তরিক কাজে অসহযোগিতা করে আসছে। তাকে বাঁধা দিলেও সে আমাকে মানছেনা বৈঠকে প্রথমে সে আমাকে বেয়াদব বলছে, পরে সেও আমাকে মারার জন্য উদ্বত হয়েছে, আমিও তাকে থাপ্পর উঠিয়েছি। তবে তাকে আমি মারিনি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মৌলি মন্ডল বলেন, ঘটনার বিষয়ে এখন পর্যন্ত আমি অবগত নই, তবে খোঁজ খবর নিবো। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Loading

শেয়ার করুন