তীব্র শীতে নাকাল হাইমচরের জনজীবন : দেখা দিয়েছে বিভিন্ন রোগ-বালাই

সাহেদ হোসেন দিপু : হাঁড় কাপানো শীতে মানুষ কাঁপছে। দেশ জুড়ে শৈত প্রবাহে নাকাল হয়ে পড়েছে মানুষ। বর্তমানে হাইমচর উপজেলায় শীত জেঁকে বসেছে । এতে নাকাল হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। ঘন কুয়াশার সঙ্গে হিমেল হাওয়ায় সৃষ্টি হয়েছে প্রচন্ড তীব্র শীত । এর ফলে খেটে খাওয়া দিন মজুর মানুষ গুলি সবচেয়ে বেশী বীপাকে পড়েছে । কুয়াশার চাদর ভেদ করে সূর্য উদয় হলেও কমছে না শীতের প্রকোপ। উত্তর থেকে বয়ে আসা বাতাসের কারণে শীত আরও তীব্র হচ্ছে।

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

তীব্র শীতের কারণে মানুষ জরুরী কাজ ছাড়া বের হচ্ছে না ঘর থেকে। শীতের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে খরকুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ভেন গাড়ী ও অটো গাড়ীর চালকেরা। শীতের তীব্র দাপটে বেশী দূর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শীতের কারণে বিভিন্ন রোগ বালাই নিউমোনিয়া,অ্যাজমা, এলার্জি ও ডায়রিয়াসহ বেশ কিছু রোগ মাথা চাড়া দিয়ে উঠেছে।

ইতিমধ্যে হাইমচর জনকল্যাণ সমিতির উদ্যোগে বিভিন্ন বিভিন্ন স্থানে কিছু কম্বল বিতরণ করা হলেও অভাবী মানুষের চাহিদা মিটেনি এখনও। তাই জনপ্রতিনিধি ও বিত্তবান শ্রেণির মানুষ সহায়তায় এগিয়ে আসলে উপকৃত হবে সাধারণ জনগণ।

বিস্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, সরকারিভাবে উপজেলায় শীতবস্ত্র (কম্বল) বরাদ্দ পাওয়া গেলেও নির্বাচনণের সময়ে বিতরণে আচরণবিধি লঙ্ঘনের আশংকায় ওই সকল শীতবস্ত্র বিতরণ করা সম্ভব হয়নি। তবে খুব শীগ্রই সেগুলো জনসাধারণের মাঝে বিতরণ করা হবে।

এদিকে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শীত নিবারণের জন্য বাড়ছে গরম কাপড়ের চাহিদা। ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া লোকজন উপজেলা সদর আলগী বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারের কাপড়ের দোকানে ভীড় করছেন শীতের পোশাক কিনতে। তাই সর্বত্রই জমে উঠেছে শীতের গরম কাপড় বেচাকেনা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ক্রেতারা দোকান ঘুরে দরদাম করে নতুন পুরাতন শীত বস্ত্র কিনছেন। সকল বয়সী এবং সকল শ্রেণি-পেশার ক্রেতাদেরই দেখা যাচ্ছে কাপড়ের দোকানগুলোতে।

আলগী বাজারের ব্যবসায়ী নূরুল ইসলাম জানায়, নভেম্বর মাসে তাদের কেনাবেচা শুরু হয়ে চলবে ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবছর গরম কাপড়ের দাম বেশি। চাহিদা অনুযায়ী মোকামে গরম কাপড় পাওয়া যাচ্ছে না। বাজারে কম দামী পোষাকের চাহিদা বেশি। জ্যাকেটের বেল পাইকারি কিনতে হয় ৮-১৫ হাজার টাকায়। এছাড়া কার্ডিগান ৬-১২ হাজার টাকা, হুডি ৩-৫ হাজার, মাফলার ২-৩ হাজার টাকা, টুপি দেড় থেকে ২ হাজার টাকা ও কম্বল ১২-২০ হাজার টাকায়।

ব্যবসায়ীরা জানান, শীতে বেচাকেনা বেশি হলে পণ্য বাকিও দিতে হয় তাদের। শীত নিবারণের জন্য সাধারণ মানুষ ছুটে আসে আমাদের কাছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের পরিচিত হওয়ায় বাকী দেওয়া যায়। কিন্তু অপরিচিত হওয়ায় অনেককেই ফিরিয়ে দিতে হয়।

রিক্সা চালক হারেস মিজি জানান, প্রচন্ড শীত, তবুও জীবিকার তাগিদে রিকশা নিয়ে বের হতে হয়। পরিবার ও ছেলে সন্তান কিংবা পেট তো আর শীত বুঝবে না। সময়মতো দুমুঠো খাবার খাওয়ার জন্য আমাদের এই শীত উপেক্ষা করে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে হয়।

জলিল গাজী বলেন প্রচন্ড শীতেও আমরা সরকারি সহায়তা পাই না। শীত চলে গেলে বা হিমেল হাওয়া থেমে গেলে অনেকেই ফটোসেশান মুলক শীতবস্ত্র নিয়ে আসবে।

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

চরাঞ্চলের শীত বিষয়ে ৫নং হাইমচর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুলহাস সরকার জানান, অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় আমাদের চরাঞ্চলে শীত বেশি পরে। এরমধ্যে আজ দু’দিন হিমেল বাতাসে জনজীবনে নেমে এসেছে কষ্টের রেখা। সীমাহীন দুঃখের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে তাদের জীবন। এখনই এদের শীতবস্ত্র প্রয়োজন। উপজেলা পরিষদ থেকে চিঠি পেয়েছি। দু-একদিনের মধ্যেই কম্বল সহ শীতবস্ত্র ব্যবস্থা করে শীতার্ত মানুষের মাঝে বিতরণ করা হবে।

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পূর্বিতা চাকমা জানান হাইমচরে সর্বসাধারণের মাঝে বিতরণের জন্য ১৫০০ কম্বল উপজেলায় পৌছেছে। কিন্তু নির্বাচনের কারনে আমরা সেগুলো বিতরণ করতে পারি নাই। ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের চিঠি দেওয়া হয়েছে। খুব সহসাই তাদের অনুকূলে কম্বল পৌঁছে দেওয়া হবে। একই সাথে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সর্বসাধারণের মাঝে এ শীতবস্ত্র বিতরণ করা হবে।

Loading

শেয়ার করুন