ফরিদগঞ্জের আসামী হাজিগঞ্জে আটক নিয়ে ধুম্রজাল!

স্টাফ রিপোর্টারঃ
নাটকীয়তার মধ্যে দিয়ে হাজিগঞ্জ থানা পুলিশ সিভিল পোশাকে এসে ফরিদগঞ্জ থানা এরিয়া থেকে আটক করে হাজিগঞ্জে আটক দেখানো নিয়ে জনমনে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা দেখা দিয়েছে।

কেন বা এমন নাটক করা হয়েছে, এ নিয়ে প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মাঝে। অপরাধ করলে থানা পুলিশ আটক করবে এটাই স্বাভাবিক কথা, কিন্তু তার জন্য একথানা এরিয়া থেকে আটক করে অন্য থানা এরিয়া দেখানো কি রহস্যজনক নয়! এমন প্রশ্ন স্থানীয়দের মাঝে। এমনি ঘটনা স্থানীয় সূত্রে জানাযায়, ফরিদগঞ্জ উপজেলার মূলপাড়া গুদাড়াঘাট থেকে সাবেক কমান্ডার শহিদউল্যা তপদারের ছেলে আরিফকে আটক কথা।

ঘটনার অনুসন্ধানে জানাযায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি বিকালে উপজেলার মূলপাড়া গুদাড়া ঘাট সামনে থেকে বুট মুরি খাওয়ার সময় তাকে সিভিল পোষাকে হাজিগঞ্জ থানা পুলিশের এসআই মিজবাহুল আলম চৌধুরীসহ তিন জন আরিফকে আটক করে। এসময় তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে নৌকা করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চাঁদপুর সদর থানা এরিয়া হয়ে হাজিগঞ্জ চলে যান। হাজিগঞ্জ থানা এরিয়ার মধ্যে বাকিলা বিসমিল্লাহ কপি হাউজে তাকে আটক করেছে বলে মামলায় দেখানো হয়। মামলায় আরিফের কাছে ১৫০ পিস ইয়াবা আছে বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে।

উপজেলার মূলপাড়া গুদাড়া ঘাটের বুট মুরির দোকানদার মফিজ সরদার বলেন, আরিফ আমার দোকন থেকে বুট ও মুড়ি নিয়ে মিজানের দোকানে যায়। কিছুক্ষন পরে হঠাৎ করে তিনজন লোক এসে তাকে ধরে নিয়ে যায়।

মূলপাড়া গুদাড়া ঘাটের আরেক ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান বলেন, আরিফ আমার দোকানে বসে বুট আর মুড়ি খাচ্ছিল এসময় তিনজন লোক এসে আরিফ কে পিছন দিক থেকে জড়িয়ে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি বাঁধা দেই। তারা আমার কাছে ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। আরিফের অপরাধ কি যানতে চাইলে চুপ থাকার কথা বলে নৌকা করে আরিফ কে নিয়ে চলে যায়।

নৌকার মাঝি নাছির উদ্দিন বলেন, ঐ দিন তিনজন লোক এই খানে আরিফকে ধরে । পরে আমার নৌকায় দিয়ে পার করে আসি। কেন আটক করা হয়েছে আমি জানিনা।

হাজিগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বিসমিল্লাহ কফি হাউজের মালিক আক্তার হোসেন বলেন, পুলিশ ছেলেটা সিএনজি করে এই খানে নিয়ে আসে। পরে ইয়াবা ট্যবলেটের পেকেট টেবেলের উপর রাখে।

মাদক মামলার প্রথম সাক্ষী শাহাজাহান বলেন, এই খানে পুলিশ একটা ছেলেকে নিয়ে এসেছে। টেবিলের উপরে তিন প্যাকেট ছিল। আমাকে বলেছে সাক্ষীর দেওয়ার জন্য আমি দিয়েছি। আমার আগে হুজুর শিক্ষিত মানুষ তিনি দিয়েছে, তাই আমিও দিয়েছি।

২য় সাক্ষী মাওলানা নজির আহাম্মেদ বলেন, আমি নামাজ পড়ে বের হয়েছি দেখেছি অনেক মানুষের ভিড়। ভিতরে গিয়ে দেখি মাদক সহ ছেলেটি বসে আছে। আমাকে সাক্ষর দিতে বলেছে আমি দিয়েছি।

আরিফের বাবা শহিদ উল্যা তপদার বলেন, আমার ছেলেকে ফাঁসানোর জন্য কেউ ইচ্ছাকৃত ইয়াবা দিয়ে আটক করিয়েছে। আমার ছেলে যদি আপরাধ করে থাকে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ আটক করবে। হাজিগঞ্জ থানা পুলিশ করলো তাও আবার মিথ্যা তথ্যদিয়ে। আটক করলো ফরিদগঞ্জে আর দেখিয়েছে হাজিগঞ্জে। আগামী কিছুদিনের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নির্বাচন। আর এই নির্বাচনে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার পরিকল্পনার হিসাবে একটি চক্র এই কাজ করিয়েছে। এতে বুঝাযায় কেউ পরিকল্পিত ভাবে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। আমি এর সুষ্ঠ তদন্ত চাই। প্রকৃত অপরাধীর বিচার চাই।

মামলার আয়ু এস আই মিছবাহুল আলম চৌধুরী বলেন, আমরা বাকিলা কফ হাউজ থেকে আরিফকে ১৫০ পিস ইয়বাসহ গ্রেফতার করি, পরে তার স্বীকারোক্তিতে তাকে সাথে নিয়ে ফরিদগঞ্জে মুলপাড়াসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান করি।

ফরিদগঞ্জ থানা অফিসার ইনর্চাজ আঃ মান্নান বলেন, আমাকে একজন ফোন করেছে পুলিশ নাকি কাউকে আটক করেছে। পরে আমি খবর নিয়ে দেখলাম হাজিগঞ্জ পুলিশ মাদকসহ আটক করেছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হাজিগঞ্জ সার্কেল) পংকজ কুমার দে বলেন, এক থানার পুলিশ অন্য থানায় আসামী ধরতে হলে সংশ্লিষ্ট থানায় অবগত করতে হয়। আরিফের বিষয়ে আমি জানি বাকিলা থেকে আটক করেছেন। যদি ফরিদগঞ্জ থেকে আটক করে থাকে, তাহলে বিষয়টি আমি খোজ খবর নিয়ে দেখবো। আর এটা হওয়ার কথা না।

Loading

শেয়ার করুন