হাইমচর নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা

হাইমচর ব্যুরোঃ
খাশ জমিন দখল করাকে কেন্দ্র করে বসত ঘরে আগুন ও লুটপাটের ঘটনায় নীলকমল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সাউদ আল নাসেরকে আসামী করে মামলা দিয়েছেন ভুক্তভোগী সুলতান সরদার।
গত ৩ মে’ শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট থানায় এ মামলা করেন তিনি। মামলায় আরও ২৪ জনকে আসামী করা হয়েছে।  হাইমচর উপজেলার নদীর পশ্চিম পাড় মধ্য চরের সীমানাবর্তী ও শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট নারায়নপুর দাইমী চর সীমানাবর্তী এলাকায়  দুটি বসত ঘর আগুন দিয়ে জালিয়ে দেয়া হয়।  গরু ও ঘরের মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় মামলার অন্যান্য আসামীরা হলেন, নীলকমল ইউনিয়নের বাদশা সরদার, শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাট এলাকার ইয়াকুব মালত, জসিমুতাইভ, আজম হক নান্টু মালত, বাবু সরদার, মোহাম্মদ আলী মুতাইভ, সবুজ ঢালী, শাহিন মোল্লা, মিন্টু সরকার, রকিব সরদার, রাজন সরদার, মনির সরদার, জুয়েল মোল্লা, কাওসার হাওলাদার, রাকিব হাওলাদার, ওহিদ সরদার,  হাসেম হাওলাদার, কাসেম হাওলাদার, ইলিয়াছ সরদার, নাসির দেওয়ান, শফি গাজী, রোজাউল কবিরাজ, দেলু চকিদার, আজিজ মাঝি।
খাস জমিন দখল করাকে কেন্দ্র করে 
বসতঘরে আগুন ও লুটপাটের অভিযোগে
মামলায় অভিযোগ সূত্রে জানাজায়, গোসাইরহাট থানার দাইমীর চরের খাশ খতিয়ানে জমি পরিস্কার করে বসবাস করেন লুৎফুর রহমান মাঝি, আইয়ুব আলী মোল্লা, সিদ্দিক সরদার, জাকির হোসেন বেপারীসহ আরও বেশ কিছু লোক। ঐ জমি থেকে উৎখাত করার জন্য বিবাদীরা তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে অত্যাচার ও র্নিযাতন চালাতো।
গত ৮ মার্চ ও ২৭ মার্চ বিবাদীরা লোকজনকে মারপিট করে ফসলাধি নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বিবাদীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন ভুক্তুভোগী লোকজন।  মামলা করার পর থেকে বিবাদীরা বিভিন্ন সময় তাদের ক্ষতি করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে থাকে।  সর্বশেষ গত ১ মে’ দুপুর ১২টার দিকে গোসাইরহাট থানার নারায়নপুর দাইমীর চরে সাউদ আল নাসেরের হুকুমে সকল বিবাদীগন এলাকার লোকজনের ৫মন মরিছ,  ৭মন কালোজিরা, ৩ বস্তা শুকনো মরিছ, ২টি ষাড় গরুসহ ঘরে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। বসত ঘরে লুটাপটের বাঁধা দেয়ায় তাদের ঘরে থাকা স্ত্রী সন্তানদের উপর হামলা চালিয়ে তাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফুলা জখম করে। তাদের চিৎকারে আশে পাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা সকলকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে চলে যায়।
 এসময় তারা সুলতান সরদার ও একই এলাকার ইউসুফ সরদারের বসত ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
মামলার ১নং স্বাক্ষী স্থানীয় জয়নাল মাল জানান, হাইমচর ও গোসাইরহাটের সীমান্তবার্তী এলাকার কিছু খাশজমি নিয়ে দীর্ঘ দিন থেকে বিরোধ চলে আসছিল। আমরা কাগজে কলমে নীলকমল ইউনিয়নের মধ্য চরের সালাউদ্দিন চেয়ারম্যানের যে প্রজেক্ট আছে সেটাও আমাদের মধ্যে রয়েছে। আমরা ঝগড়া চাইনা বিদায় ঐখানে যাই না। আমাদের ডিসিআর করা খাশ খতিয়ানে আমরা বসবাস করে আসছি। তারা বিভিন্ন সময় জোর খাটিয়ে আমাদের ফসল ঘরে নেয়ার সময় হলেই এসে হামতাম করে ফসলাধি নিয়ে চলে যায়। তারই ধারাবাহিকতায় গত ১ মে’ হঠাৎ করে এসে আমাদের লোকজনের উপর হামলা করে ফসলাধিসহ ঘরের মামলামাল লুট করে নিয়ে যায়। যাওয়ার সময় দুইটি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়। আমাদের ঘর দুটি আগুনে পুড়ে শেষ হয়ে গেছে। আমরা এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
নীলকমল ইউপি চেয়ারম্যান সাউদ আল নাসের জানান, আমাদের খাশ জমিন গোসাইরহাট এলাকার লোকজন জোরকরে দখল করেন। আমাকে এলাকার লোকজন বিষয়টি জানালে সেখানকার চেয়ারম্যান মেম্বারদের সাথে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার পর তারা সেখান থেকে চলে যায়।
পরবর্তীতে আমাদের লোকজন ঐখানে ফসল চাষবাষ করে। ফসল ঘরে নেয়ার সময় হলে তারা এসে লোকজনের ফসলাধি নিয়ে যায়। গত ১ মে’ আমাদের লোকজনের ফসলাধি তারা নিতে আসলে তারা প্রতিহত করেন। ফসলাধি নিতে না ফেরে আমাদের লোকজনকে ফাসানোর জন্য নিজেদের ঘর বাড়ি পোড়া দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা  মামলা দেয়। আমরা বিষয়টি পুলিশ সুপার মহদয়কে অবগত করেছি। দুই জেলার পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে এসে এটার তদন্ত করবেন বলে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।

Loading

শেয়ার করুন