আন্দোলনে লাভলু নিহত ঢাকায়, মামলার আসামিরা রংপুরের: ২৭ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

নিউজ ডেস্ক : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ৫ আগস্ট ঢাকার উত্তরায় রংপুরের হারাগাছ পৌরসভার মোল্লাটারি এলাকার দোকান কর্মচারী লাভলু মিয়া হত্যার ঘটনায় নিজেকে নিহতের ফুফাতো ভাই দাবি করে ২২১ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেছেন দুখু মিয়া নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় হারাগাছসহ আশপাশের এলাকার ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এখন ওই মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার নাম করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন নিহত লাভলু মিয়ার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনরা।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর রিপোর্টার্স ক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করে প্রতারণার দায়ে দুখু মিয়াকে গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন লাভলু মিয়ার ছোট ভাই ডালু মিয়া।

সংবাদ সম্মেলনে ডালু মিয়া বলেন, ‌‘আমাদের বাড়ি হারাগাছের মোল্লাটারি এলাকায়। আমার বড় ভাই লাভলু ঢাকায় দোকান কর্মচারী হিসেবে চাকরি করতেন। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে ৫ আগস্ট বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে উত্তরা পশ্চিম থানার ৩ নম্বর সেক্টরের রবীন্দ্র সরণিতে রাস্তার ওপর মিছিল করার সময় পুলিশের গুলিতে আহত হন। তাকে উদ্ধার করে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করলে ওই দিন সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। খবর পেয়ে আমরা সেখান থেকে লাশ এনে গ্রামের বাড়িতে দাফন করি। এ ঘটনায় উত্তরা পশ্চিম থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ১৭৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৩০০-৪০০ জনকে আসামি করে ২২ আগস্ট হত্যা মামলা করেছি আমি।’

ডালু মিয়া অভিযোগ করেন, ‘আমার ভাই নিহতের ঘটনা নিয়ে গত ৩১ আগস্ট হারাগাছের ধুমেরপাড় এলাকার মৃত আব্দুস সামাদের ছেলে দুখু মিয়া নিজেকে আমাদের ফুফাতো ভাই দাবি করে মৃতের ঘটনাস্থলের নাম পরিবর্তন উত্তরা পূর্ব থানায় শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ২২৩ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০-৩০০ জনকে আসামি করে আরেকটি মামলা করেন। এই মামলার আসামিরা হারাগাছ ও আশপাশের এলাকার বাসিন্দা এবং আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী। এরপর দুখু মিয়া টাকার বিনিময়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের নাম এফিডেভিট করে অর্থ বাণিজ্য শুরু করেছেন। এ বিষয়ে দুখু মিয়ার বিরুদ্ধে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ এনে গত ১৭ নভেম্বর রংপুর আদালতে মামলা করেছি। কিন্তু তার পরও দুখু মিয়া মামলার নামে অর্থ বাণিজ্য অব্যাহত রেখেছেন। মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে মামলা থেকে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে ২৭ জন আসামির কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে নিয়ে এফিডেভিট করে দিয়েছেন। পরে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি ঘটনাস্থল উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা আগেই হওয়ায় সেখানে নতুন মামলা না নেওয়ায় উত্তরা পূর্ব থানায় মামলা করেছেন অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য। আসলে দুখু মিয়া আমার ফুফাতো ভাই নন, তাকে আমরা চিনি না। জালিয়াতি ও প্রতারণা করায় তাকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’

সংবাদ সম্মেলনে লাভলু মিয়ার স্ত্রী নুরনাহার বেগম, ছেলে রুহুল আমিন ও মেয়ে লাইজু আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

নুরনাহার বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী লাভলু মিয়া ৫ আগস্ট উত্তরায় পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ার পর ঢাকা থেকে লাশ এনে গ্রামের বাড়িতে দাফন করেছি। এরপর পরিবারের সবার সম্মতিতে আমার দেবর ডালু মিয়া উত্তরা পশ্চিম থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে দুখু মিয়া নিজেকে লাভলুর ফুফাতো ভাই দাবি করে উত্তরা পশ্চিম থানায় মামলা করতে যান। তখন পুলিশ জানায় মামলা আগেই হয়েছে। নতুন করে আরেকটি হত্যা মামলা নেওয়ার সুযোগ নেই। এরপর দুখু মিয়া উত্তরা পূর্ব থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আমাদের এলাকাসহ আশপাশের এলাকার নিরীহ মানুষকে জড়িয়ে অর্থ বাণিজ্য করছেন। ২৭ জনের কাছ থেকে এক লাখ টাকা করে নিয়েছেন। পরে ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জেনেছেন লাভলু হত্যা মামলার বাদী তার ছোট। এরপর থেকে অর্থ ফেরত চাচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। এখন দুখু মিয়া নানাভাবে তাদের হুমকি দিচ্ছেন। আমাদেরও হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। এ অবস্থায় তাকে গ্রেফতারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’

এ ব্যাপারে জানতে দুখু মিয়ার মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিক পরিচয় দিতেই ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর বেশ কয়েকবার কল দিলেও রিসিভ করেননি। সর্বশেষ সোমবার সন্ধ্যায় ফোন দিয়ে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়।

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪

স্ক্যাবিস বা চুলকানি থেকে রক্ষা পেতে কী করবেন?

ডায়াবেটিস প্রতিকার ও প্রতিরোধে শক্তিশালী ঔষধ

শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

যৌন রোগের কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন

শ্বেতীর সাদা দাগ দূর করার উপায় কি?

Loading

শেয়ার করুন