চোখ ওঠা রোগে হোমিওপ্যাথি
ডা.মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
ঋতু পরিবর্তনের কারণে এসময় চোখের রোগবালাই হয়ে থাকে। তারমধ্যে একটি হচ্ছে চোখ ওঠা। এটি আসলে একটি ভাইরাসজনিত সংক্রমণ। কনজাংটিভাইটিস বা চোখের পর্দায় প্রদাহ হলে তাকে চোখ ওঠা বলে। চোখ ওঠার মূল কারণ ভাইরাসজনিত এবং এটি অতিমাত্রায় ছোঁয়াচে। চোখ ওঠায় আক্রান্ত কারও চোখের দিকে তাকালে কারোর চোখ ওঠে না। ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত চোখ কিছুদিন পর ভালো হয়ে যায় ঠিক, কিন্তু আশপাশে অনেককেই আক্রান্ত করে বা করতে পারে। তবে চোখ ওঠা রোগী মূলত সে তার নিজের জন্য সমস্যা নয়, বরং অন্যের জন্য সমস্যা। কারও চোখ ওঠা হয়তো তিন দিনে ভালো হয়ে যায়, কারোর আবার ৩ সপ্তাহ লাগতে পারে। সেটা নির্ভর করে কার কী ধরনের ভাইরাস আক্রান্ত করেছে এবং সেই রোগীর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কেমন তার ওপর।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট গবেষক জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা তার কলামে লিখেন… চোখের সাদা অংশ একটি পাতলা পর্দা দিয়ে আবৃত থাকে।যার নাম কনজাংটিভা। এই কনজাংটিভায় যখন সংক্রমণ বা প্রদাহ হয়, তখন এটি লালচে হয়। এর সঙ্গে আরও কিছু উপসর্গ থাকতে পারে। যেমন চুলকানি, অস্বস্তি, ব্যথা, আলোক সংবেদনশীলতা, ঘন সাদাটে বা হলদেটে নিঃসরণ ইত্যাদি। যদিও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এই কনজাংটিভাইটিসের কারণ ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাস। তবে অ্যালার্জি, ঠান্ডা সর্দি বা চোখ কোনো রাসায়নিক বা ক্ষতিকর পদার্থের সংস্পর্শে এলেও কনজাংটিভায় প্রদাহ হয় এবং চোখ লাল দেখায়। ভাইরাসজনিত চোখ ওঠায় পাতলা বর্ণহীন পানি পড়ে বেশি। তবে ব্যাকটেরিয়াজনিত হলে নিঃসরণটি ঘন ও একটু হলদেটে হয়ে থাকে।আর ঠান্ডার সময় মৃদু চোখ উঠতে দেখা যায় তবে যেকোনো মৌসুমেই চোখ উঠতে পারে।
> চোখ উঠা’ রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ:-
* চোখের চারপাশে হালকা লাল রং হতে পারে।
* চোখের পাতা ফুলে যায়।
* চোখ জ্বালাপোড়া করতে পারে।
* চোখ থেকে পানি পড়তে পারে।
* চোখ থেকে ঘন হলুদ অথবা সবুজাভ হলুদ রঙের ময়লা জাতীয় পদার্থ বের হতে পারে।
* সকালে ঘুম থেকে উঠার পর চোখের দুই পাতা লেগে থাকে।
* নবজাতকের চোখ উঠা একটি বিশেষ বিষয়।
* ওষুধপত্র দিলেও নবজাতকের চোখ দুই-তিনদিন লাল অথবা ফোলা থাকতে পারে।
* যদি লালাভ রং এবং ফোলা দীর্ঘসময় ধরে থাকে তখন অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার।
> চোখ উঠলে যা করতে হবে:-
যেসব কারণে বিশেষত এলার্জিক কোনো বস্তু, কেমিক্যালস কিংবা পরিবেশ দ্বারা চোখ উঠে সেসব বিষয় থেকে দূরে থাকতে হবে। আর যদি আপনার শিশুর চোখ উঠে থাকে সেক্ষেত্রেও হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে এবং চোখের পাতাগুলো খোলা রাখতে হবে। বড় বাচ্চারা চোখে কালো চশমা পরতে পারে।
> কখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন:-
* যখন আপনার শিশুর চোখ থেকে ঘন হলুদ কিংবা সবুজাভ হলুদ রঙের তরল পদার্থ বের হয়।
* চোখ ব্যথার কথা বলে।
* প্রচণ্ড সূর্যালোকেও চোখ ব্যথা করলে।
* যখন চোখে একদমই কিছু দেখতে পারে না অথবা পারলেও দেখতে সমস্যা হয়।
* যখন পরিবেশগত বিষয়ে কিংবা কোনো এলার্জিক বস্তুর জন্য চোখে অসুবিধা অনুভব করে।
* শিশুর বয়স যদি ২ মাসের কম হয়।
* চোখের পাতা যদি ফুলে উঠে কিংবা লাল হয়ে যায়।
যা করবেন না-
* কোনো রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না।
* শিশুকে জোর করে চোখ খুলতে বলা যাবে না।
> চোখ উঠা থেকে যে জটিলতার সৃষ্টি হতে পারেঃ-
কর্নিয়ায় ঘা, কর্নিয়া ছিদ্র হয়ে চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে।
> প্রতিকার:-
* বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চোখ উঠা বা কনজাংটিভাইটিস পরিবারের একজনের থেকে অন্যজনের হতে পারে। সুতরাং এসব ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধের জন্য পরিবারের * * সবার পৃথক কাপড়, তোয়ালে থাকতে হবে।
* পুরো হাত ভালোমতো পরিষ্কার করতে হবে।
* যেসব বিষয় শিশুর জন্য এলার্জিক তা থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
> চোখ উঠা রোগীর ঘরোয়া পরামর্শঃ-
চোখ উঠা রোগ থেকে বাঁচতে হলে কিছু পরামর্শ মেনে চলা উত্তম। পরামর্শ গুলো হল:
* এক জনের ব্যবহৃত তোয়ালে অন্যজন ব্যবহার না করা।
* আক্রান্ত চোখ স্পর্শ করলে সাবান দিয়ে হাত ধোয়া।
* ডাক্তারের পরামর্শমত সঠিকভাবে সঠিক সময় ঔষধ নেয়া।
* ঘনঘন চোখ ঘষা থেকে বিরত থাকা ও চোখে বার বার পানির ঝাপসা না দেয়া।
* অসুস্থ চোখে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করা যাবে না।
* ধূলা-বালি ও সূর্যের আলো থেকে চোখ রক্ষায় কালো সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে।
* পুকুরের পানিতে গোসল করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
* চোখ উঠা ছোঁয়াচে রোগ। তাই পরিবারের অন্যান্যদের সাথে মেলামেশা কমানো উচিৎ।
* শিশুদের চোখ উঠলে হালকা বা কুসুম গরম পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করতে হবে।
* চোখের পাতা খোলা রাখতে হবে। তবে জোর করে চোখ খোলার চেষ্টা করবেন না।
* চোখের যেকোনো রোগেই অবহেলা করবেন না। কারণ সামান্য ভুলের জন্য সারাজীবন আফসোস করা লাগতে পারে।
* ঠান্ডা পানির ভাপ দেওয়া:-অ্যালার্জি প্রভাবিত জায়গাগুলোতে ঠান্ডা জলের প্রভাব দিলে কিছুটা আরাম পাওয়া যায়। ঠান্ডা জলে কাপড় ভিজিয়ে ওই অ্যালার্জি সমৃদ্ধ অঞ্চলটিতে রাখা যেতে পারে অথবা ক্যামোমিল টী-ব্যাগও ঠান্ডা ভাপ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
* শসা:-শসা গোল গোল করে চোখের উপর দেওয়া যেতে পারে। শসা চোখের ফোলাভাব,চুলকানি ইত্যাদি কমায়।
* গোলাপ জল:-গোলাপ জল চোখের অ্যালার্জি নিরাময়ের জন্য খুবই উপকারী একটি প্রাকৃতিক উপাদান।এটি চোখের জ্বালাকে প্রশমিত করে,ঠান্ডা রাখে এবং চোখকে পরিষ্কার রাখে। এটি চোখের ড্রপ হিসেবেও ব্যবহৃত হয়।
* গ্রীন টি:-গ্রীন টি অ্যালার্জির জন্য সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে তৈরি ওষুধ ।এটি চোখের প্রদাহ কমাতে ব্যবহৃত হয়।প্রকৃতিতে অ্যান্টি প্রদাহজনক ওষুধ হিসেবে এটি ব্যবহৃত হয়। উপরের পরামর্শগুরো কেবলই সচেতনতার জন্য। চোখের যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া জরুরি।
> চোখ ওঠা রোগের ইতিহাসঃ-
চোখ ওঠা যেভাবে হয়ে উঠলো ‘জয় বাংলা’ রোগ!
চোখের কনজাঙ্কটিভায় ভাইরাসজনিত একধরণের সংক্রমণ বাংলাদেশে পরিচিত ‘চোখ ওঠা’ নামে। অতি পরিচিত এবং অত্যন্ত্য সংক্রামক এই রোগটির ওপার বাংলায় রয়েছে আরও একটি নাম। আর সেই নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে এদেশের মুক্তিযুদ্ধের এক অনন্য যোগসূত্র!
১৯৭১ সালে মহামারী আকারে পশ্চিম বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিলো। রোগটি পূর্ব বাংলায় চলা মুক্তিযুদ্ধের কারণে সীমান্ত পেরিয়ে চলে আসা বাঙালি শরণার্থীদের কারণেই ছড়িয়েছিলো বলে এর নাম দেয়া হয় ‘জয় বাংলা’ রোগ!
‘জয় বাংলা’র প্রকোপ ছিলো এতোটাই, যে সেসময় ৫০ লাখেরও বেশি লোক এই রোগে ভুগেছেন। তখনকার পত্রিকাগুলোর সংবাদ ঘাঁটলে এই সংখ্যা আরও বেশি বলেই জানা যায়।
এই রোগ কল্যাণী, চাপড়ার বড় আন্দুলিয়া, বেতাই, করিমপুর, শিকারপুর শরণার্থী শিবিরে ছড়িয়ে পড়ে। একসময় এটি আক্রমণ করে কলকাতা শহরের শিবিরগুলোর শরণার্থীদেরও।
আক্রান্তদের মধ্যে শরণার্থীরা যেমন ছিলেন তেমনি সংক্রামক এই রোগের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন স্থানীয় অধিবাসীরাও। ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সরকারি হিসাবমতে প্রায় ৫ লাখ লোক অ্যাকিউট হেমোরেগেজিং কনজাঙ্কটিভাইটিস এর চিকিৎসাসেবা নেন। কলকাতা শহরের শতকরা ৬৫ জন লোক এই রোগে আক্রান্ত হন বলে জানিয়েছিলেন জর্জ চাইল্ডস কোন তার ‘এনসাইক্লোপিডিয়া অফ । এই এএইচসি ‘চোখ ওঠা’ বা কনজাঙ্কটিভাইটিস-এর মধ্যে সবচেয়ে ক্ষতিকর ভ্যারাইটি।
‘জয় বাংলা’য় কলকাতা শহর কতটা বিপর্যস্ত ছিলো, ৪ জুন ১৯৭১এর দৈনিক যুগান্তরের একটি শিরোনামে তা স্পষ্ট। ‘চোখের রোগে ট্রেন বন্ধের আশঙ্কা’ শিরোনামের রিপোর্টে বলা হচ্ছে, চোখ-ওঠায় রেলওয়ের বিপুলসংখ্যক কর্মী আক্রান্ত হয়েছেন। পূর্ব রেলের শিয়ালদহ ডিভিশনের ৪৯ জন গার্ড এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ছুটি নিয়েছেন। বহুসংখ্যক বুকিং ক্লার্ক চোখের রোগে আক্রান্ত। সাধারণ ছুটিতে থাকা ২৭ কর্মীর ছুটি বাতিল করেও ট্রেন-চলাচল অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
চোখ-ওঠায় বাতিল হয়ে গেছে ফুটবল ম্যাচ। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুল। পত্রিকার পাতায় পাতায় চোখের রোগ থেকে রক্ষা পাওয়ার বিজ্ঞাপন, কেউ-বা দিচ্ছে হোমিওপ্যাথিকের বিজ্ঞাপন, কেউ-বা সালফাসিটল কিংবা তরল সাবানের বিজ্ঞাপন।
এই রোগ নিয়ে মশকরা করতেও ছাড়েনি তখনকার দৈনিকগুলো। পাত্রী দেখতে গিয়ে পাত্রের চোখে চশমা। গোড়াতেই পাত্রীর প্রশ্ন. ‘চোখ উঠেছে’? চোখ-ওঠা নিয়ে যুগান্তর এ কাটুনিস্ট এঁকেছেন এমনই অনবদ্য এক কার্টুন।তখনকার যুগান্তর এর রবিবারের সাময়িকী রম্য করে লিখেছেন,
‘জ্বালা দিতে ঠাঁই নাই জ্বালা দেয় সতীনের ভাই, কলকাতার লোকের হয়েছে সেই দশা। একেই তো জ্বালা-যন্ত্রণার সীমা নেই, তার ওপরে কোথা থেকে এক চোখের রোগ এসে চেপে বসল। ‘জয় বাংলা জয় বাংলা’ ডাক ছাড়তে ছাড়তে সারা শহর যেন কটা দিনের জন্যে… ধুলি পড়ে একেবারে কলুর বলদ হয়ে গেল!’
বাংলাদেশি সাহিত্যেও ছাপ পড়েছে এই ‘জয় বাংলা’র। আহমদ ছফা ‘অলাতচক্র’ উপন্যাসে লিখেছেন,
‘কলকাতা শহরের লোকদের মুখে ইদানিং (১৯৭১) ‘জয় বাংলা’ শব্দটি শুনলে আমার অস্তিত্বটা যেন কুঁকড়ে আসতে চায়। শেয়ালদার মোড়ে মোড়ে সবচে সস্তা, সবচে ঠুনকো স্পঞ্জের স্যান্ডেলের নাম ‘জয় বাংলা’ স্যান্ডেল।… যে চোখ-ওঠা রোগটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছিল, কলকাতার মানুষ মমতাবশত তারও নামকরণ করেছিল ‘জয় বাংলা’।’
চোখ-ওঠা পশ্চিমবঙ্গে এত বেশি প্রভাব ফেলেছিল একাত্তরে, স্থানীয় গণমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল জয় বাংলার প্রাদুর্ভাবের কথা। নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চাশ লক্ষ লোকের জয় বাংলায় আক্রান্ত হওয়ার সংবাদ ছাপে। বাংলাদেশের সংবাদ সংগ্রহে এসে পশ্চিমবঙ্গে বিদেশি গণমাধ্যমের কয়েকজন কর্মীও আক্রান্ত হয়েছেন চোখের এই প্রদাহে।
এখনও এই রোগটি পশ্চিমবঙ্গের অনেক স্থানেই ‘জয় বাংলা’ বলে পরিচিত বলে জানিয়েছেন কবি ও সাংবাদিক প্রদীপ কর’ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘এখনও আমাদের ওখানকার গ্রামগুলোতে এই রোগকে জয় বাংলাই বলে। আমার নিজস্ব ধারণা, বাংলাদেশের পতাকায় যে সবুজের ভেতরে লাল সূর্য দেখা যায়, সেরকমই এই রোগে চোখ টকটকে লাল হয়ে ওঠে বলেই হয়তো একে এখনও জয় বাংলা বলে।’
তিনি জানান, শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়সহ পশ্চিমবঙ্গের অনেক সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্মে এই ‘জয় বাংলা’র উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশের প্রয়াত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদও তার লেখায় এই রোগের কথা উল্লেখ করেছেন।
কলকাতাবাসীকে চরম অসুবিধায় ফেলে দিলেও যুদ্ধের ময়দানে এটি সুবিধা করে দিয়েছিলো মুক্তিযোদ্ধাদের! ডি ডি প্রমাণিক তার হবেষণা নিবন্ধ ‘জয় বাংলা : অ্যান এপিডেমিক কনজাঙ্কটিভাইটিস ইন ইন্ডিয়া’তে জানান পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি এই রোগে আক্রান্ত হয় পূর্ব বাংলায় অবস্থান করা পাকিস্তানি সৈন্যরাও। পাকবাহিনীর ভোগান্তিটা একটু বেশিই ছিলো, কারণ এই রোগের সঙ্গে তারা খুব একটা পরিচিত ছিলো না। অনাকাঙ্ক্ষিত এই মহামারী কোনো কোনো ক্ষেত্রে ট্যাকটিকালি গেরিলা যোদ্ধাদের কিছুটা সুবিধা এনে দিয়েছিল। সেকারণে মুক্তিযোদ্ধারাই একে ডাকতে শুরু করেন ‘জয় বাংলা রোগ’ নামে! ৫১ বছর আগের সেসব দিনের স্মৃতি আজও অমলিন কালের সাক্ষী হয়ে থাকা পশ্চিম বাংলার অনেক অঞ্চলের স্থানীয়দের কাছে। এখনও তাই এ রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটলে উঠে আসে বাঙালির মুক্তির সংগ্রামের অনন্য সেই স্লোগানের নাম!তথ্যসূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।
> হোমিও সমাধানঃ-
রোগ নয় রোগীকে চিকিৎসা করা হয় এই জন্য একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসক কে ডা.হানেমানের নির্দেশিত হোমিওপ্যাথিক নিয়মনীতি অনুসারে চোখ উঠা রোগসহ যে কোন জটিল ও কঠিন রোগীর চিকিৎসা ব্যক্তি স্বাতন্ত্র্য ভিওিক লক্ষণ সমষ্টি নির্ভর ও ধাতুগত ভাবে চিকিৎসা দিলে আল্লাহর রহমতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতিতে চোখ উঠা রোগ চিকিৎসা সম্ভব।অভিজ্ঞ চিকিৎসক গন যেই সব মেডিসিন প্রাথমিক ভাবে ব্যবহার করে থাকেন:- বামদিকের চোখ ওঠার এক চমৎকার আরােগ্যকর ঔষধ রাসটক্স এর লক্ষণ চোখ ব্যথা, চোখের পাতা ফোলা, গরম জল পড়া, আলোক সংবেদী। চোখ জ্বলে, ঘন পিঁচুটিতে চোখ জুড়ে থাকে। ঠান্ডায় যন্ত্রণা বাড়ে, চোখ বুজে থাকলে আরাম লাগে। জলে বা বৃষ্টিতে ভিজে চোখের পাতার পক্ষাঘাত। ৬ বা ৩০ শক্তি থেকে পর্যায়ক্রমে উচ্চশক্তি।ডান চক্ষু উঠলে এপিস মেল এর অন্যতম লক্ষন স্ফীতি / চামড়ার চুলকানিযুক্ত ফোলা/অ্যালার্জি । চোখের চারপাশে ফুলে যাওয়ার ফলে চোখের পাতা খুলতে পারে না।দুটি চক্ষুই উঠেছে। চক্ষু রক্তবর্ণ টনটন ঝনঝন করকর করছে, পিচুটিতে চোখ দুটি জুড়ে যাচ্ছে। সিফিলিনাম ২টি ডােজ দিয়ে আর্জেন্ট নাই ২০০।আর যে সকল রোগে রক্তজমা ও মুখচোখ লালবর্ন হয় সেইসব রোগের ঔষধ হিসেবে বেলেডোনা ব্যবহার হয়। চোখ ওঠা, সাথে ব্যাথা, আলো বা রোদ সহ্য করতে পারে না, – বেলেডোনা ৩।
চোখ থেকে অনেকসময় অ্যাসিডিক কিছু বা ঝাঁঝালো কিছু নির্গমণ হয়,যার ফলে চোখে জ্বালা করে, প্রদাহ হয়, চোখ দিয়ে জল বের হয়। এইরকম হলে ইউফ্র্যাসিয়া নামক হোমিওপ্যথিক ওষুধটি ব্যবহৃত হয়।যখন চোখ দিয়ে একটা হলুদ মতন পাতলা স্রাব বের হয়, চোখে জ্বালা করে এবং চুল্কায়, চোখের পাতাগুলো মনে হয় দানা বেঁধে আছে, তখন পালসাটিলা নামক হোমিওপ্যাথিক ওষুধটি ব্যবহার করতে হবে। সহ আরো অনেক ঔষুধ লক্ষণের উপর আসতে পারে, তাই ঔষধ নিজে নিজে ব্যবহার না করে অভিজ্ঞ হোমিওচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
লেখক, প্রতিষ্ঠাতা,জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি, চেম্বার : মগবাজার মিডিয়া পাড়া ঢাকা