ব্রণ কি? কেন হয়? করনীয় ও চিকিৎসা
ট্রপিক্যাল একনি যা অতিরিক্ত গরম এবং বাতাসের আর্দ্রতা বেশি হলে পিঠে এবং উরুতে হয়ে থাকে।
প্রিমিন্সট্রুয়াল একনি যা সাধারণত মহিলাদের মাসিকের সাপ্তাহ খানেক আগে মুখে হতে দেখা দেয়।
একনি কসমেটিকা যা কোনো কোনো প্রসাধনী দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের ফলে হতে পারে।
একনি ডিটারজিনেকস যা অধিক হারে মুখে সাবানের ব্যবহারের ফলে হতে পারে।
স্টেরয়েড একনি যা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবনে হতে পারে। এ ঔষুধ একাধারে অনেকদিন ব্যবহারের ফলে ব্রণের পরিমান আরও বেড়ে যেতে পারে।
কাদের বেশী হয়
বয়ঃসন্ধিকালে এ রোগটা বেশী হয়। ১৮ থেকে ২০ বছরের ছেলেমেয়েদের মধ্যে এ রোগটা সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। অনেকে দীর্ঘ সময় ধরে এ রোগে ভোগে। ২০ বছর বয়সের পর সাধারণত এ রোগটা কমে আসে। তবে কিছু কিছু মেয়েদের ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়স পর্যন্ত এ রোগ দেখা যায়।
ব্রণ থেকে মুক্তির উপায়
কিছু নিয়ম মেনে চললে সহজেই ব্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। যদিও কোনো বিশেষ খাবারের কারনে ব্রণ হয় না কিন্তু যদি কোনো খাবার খেলে ব্রণের সংখ্যা বৃদ্ধি পায় থাকে তবে সে খাবারটি বাদ দিতে হবে। প্রচুর ফলমূল ও পানি খেতে হবে। মুখে ব্রণ থাকলে কোন রাসায়নিক উপাদান বা কসমেটিকস ব্যবহার করা উচিত নয়, অবশ্যই প্রাকৃতিক বা হারবাল জিনিস ব্যবহার করতে হবে।
ব্রণ হলে করনীয়
দিনে ২ থেকে ৩ বার হালকা সাবান বা ফেসওয়াশ দিয়ে ভাল করে মুখ ধূতে হবে।
কখনোই ব্রণে হাত দেয়া যাবে না।
ত্বকে তেল আছে এমন কোন কসমেটিকস বা মেকআপ ব্যবহার করা যাবে না।
মাথা খুশকিমুক্ত রাখতে হবে।
অন্যের তোয়ালে ব্যবহার করা যাবে না।
রাতে পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে।
প্রোটিন ও ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার বেশী করে খেতে হবে।
প্রচুর পরিমাণে শাক-সবজি, ফল ও পানি পান করুন।
ঝাল, মশলাযুক্ত ও তৈলাক্ত খাবার খাওয়া যাবে না।
ব্রণ হলে একেবারেই আচার খাবেন না তবে মিষ্টি চাটনি খাওয়া যেতে পারে।
তেলযুক্ত ক্রিম অথবা ফাউন্ডেশন ব্যবহার করা যাবে না।
চুলে এমন ভাবে তেল দেবেন না যাতে মুখটাও তেল তেলে হয়ে যায়।
অতিরিক্ত রাগ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
বেশি পরিমাণে নিরামিষ খাবার খান অপরদিকে আমিষ খাবার যতটা সম্ভব না খাওয়ার চেষ্টা করুন।
ডেইরি প্রোডাক্টসের মধ্যে হরমোনাল উপাদান খুব বেশি পরিমাণে থাকে বলে তা খুব সহজে রক্তের সঙ্গে মিশে যায়। এ কারণে পনির, দুধ এবং দই কম খেতে হবে।
কোল ড্রিঙ্কস একেবারেই খাওয়া যাবে না।
মানসিক চাপমুক্ত থাকতে হবে।
রোদে বের হবেন না, রৌদ্র এড়িয়ে চলতে হবে।
প্রতিরোধের উপায়
অধিক পরিমানে শাক-সব্জি খেতে হবে।
মুখের তৈলাক্ততা কমাতে হবে।
তৈলাক্ততা কমানোর জন্য সাবান দিয়ে দিনে কয়েকবার মুখ ধুতে হবে।
তৈলাক্ত খাবার, ঝাল, ভাজাপোড়া, চকলেট, আইসক্রিম ও ফাস্টফুড খাওয়া কমাতে হবে।
ব্রণ একবার হয়ে গেলে খোঁটা যাবে না, খুঁটলে গর্ত হয়ে যাবে। আবার, হাত আর নখ থেকে জীবাণু বেয়ে ব্রণকে আক্রান্ত করে এবং ব্রণটা ফোঁড়ায় রূপান্তরিত হয়।
তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছতে হবে, সেটাও বারবার ধুয়ে পরিস্কার করে রাখতে হবে।
ব্রন পেকে গেলে অথবা বেশী হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
ফর্সা হওয়ার জন্য আর ব্রণের প্রতিকার হিসেবে স্টেরয়েড অয়েনমেন্ট কোনভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। এতে চামড়ার ক্ষতি হয় এবং স্টেরয়েড অয়েনমেন্টের ব্যবহার উল্টো ব্রণের সৃষ্টি হতে পারে।
ব্রণের জন্য ত্বকে যে গর্ত হয়, তা দূর করার জন্য ভাল ব্যবস্থা এখন এদেশেই আছে। এর মধ্যে পাঞ্চ স্কাররিমুভার, ডার্মাব্রেশন, স্কার এলিভেশন ইত্যাদি পদ্ধতিতে গর্ত আর দাগ দূর করে মুখের ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়।
চিকিৎসা ব্যবস্থা
ব্রণের অনেক ধরনের চিকিৎসা আছে। ব্রণ হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত। অনেক সময় চিকিৎসা না করালে ব্রণ ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে, ত্বকে গভীর প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে। আবার, ব্রণ হলে চেহারা খারাপ দেখানোর কারণে অনেকে হতাশ হয়ে যায়।
ব্রণের পরিমাণ যদি খুব বেশি হয় তবে টেট্রাসাইক্লিন অথবা ইরাইথ্রোমাইসিন সেবন হয়। এ জাতীয় ওষুধ একাধারে অনেক দিন খেতে হতে পারে। এসব ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। সাধারণভাবে রেটিন-এ ক্রীম অথবা পেনক্সিল ২.৫% জেলটি নিরাপদে ব্যবহার করা যেতে পারে। দ্রুত ব্রণের চিকিৎসা এর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাবকে বিনাশ করে।
ব্রণের চিকিৎসা পেতে হলে যোগাযোগ করুন : বাংলাদেশের যে কোনো জেলায় কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।