নারী ও পুরুষের বন্ধাত্ব : কারণ ও প্রতিকার

প্রাচীন কাল থেকে আমাদের সমাজের একটি অন্যতম ভুল ধারনা বন্ধ্যাত্ব যেন শুধুমাত্র নারীর কারনেই হয়। পুরুষ সন্তান লাভের আশার একাধিক বিয়ে করে থাকেন, অথচ তারা জানেনই না, সেই দম্পত্তির সন্তান না হবার জন্য সেই পুরুষই দায়ি!

জি , সন্তান না হবার জন্যে নারীর পাশাপাশি পুরুষও সমান দায়ী, আর বর্তমানে আমাদের সমাজের অন্যতম এক মাথাব্যথার কারন এই পুরুষের বন্ধ্যাত্ব। আজ পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে আসুন জেনে নেই কিছু কথা।

পুরুষের বন্ধ্যাত্ব কেন হয়ঃ
প্রজননের জন্যে পুরুষের শরীর থেকে আসে শুক্রানু । পুরুষের শুক্রানু আর নারীর ডিম্বানুর মিলনেই নারী গর্ভধারন করে। আর পুরুষের শুক্রানুকে সেই ডিম্বানুকে নিষিক্তকরন ও গর্ভধারন এর উপযুক্ত হতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হয় । যেমন –

১। শুক্রানুকে হতে হয় সুস্থ ও সবল
২। নির্দিষ্ট পরিমান শুক্রানু থাকতে হয় প্রতি মিলি লিটার সিমেন বা বীর্যে
৩ । শুক্রানুকে স্বাভাবিক গঠনের হতে হয়
৪। শুক্রানুর চলাচল ক্ষমতা বা মোটাইলিটি থাকতে হয়

 

বন্ধ্যাত্বের কিছু অসুখজনিত কারনঃ
১। ইনফেকশন / সংক্রমণ
২। অকাল বীর্যপাত
৩। ক্রোমসমের সমস্যা
৪। টিউমার
৫। শুক্রাশয়ের জন্মগত ত্রুটি
৬ । অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস
৭। কোন কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

বন্ধ্যাত্বের পরিবেশগত কারনঃ
১। কল কারখানার রাসায়নিকের সংষ্পর্শ
২। ভারী ধাতব বিষক্রিয়তা
৩। রেডিয়েশন / এক্স রে’র সংষ্পর্শ

বন্ধ্যাত্বের ঝুকিসমূহঃ
১। ধুমপান
২। এলকোহল পান
৩। অতিরিক্ত ওজন
৪। বিষক্রিয়া হয়েহে এমন রোগী
৫। রেডিয়েশন নিয়েছেন এমন রোগী

কিভাবে নিশ্চিত হবেন বন্ধাত্বের জন্যে পুরুষ দায়ীঃ
সিমেন এনালাইসিস পরীক্ষার মাধ্যমে খুব সহজেই জানা যায় পুরুষের বন্ধাত্বের কারন । এছাড়াও আল্ট্রাসনোগ্রাম , হরমোন পরীক্ষা , জেনেটিস টেস্ট ইত্যাদির মাধ্যমে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নির্নয় করা যায় ।

gif maker

কোন ডাক্তার দেখাবেনঃ
পুরুষের বন্ধ্যাত্বের জন্যে ইনফার্টিলিটি স্পেশালিস্টিকে দেখাতে পারেন। তবে আমাদের দেশে অধিকাংশ সময়ই গাইনি রোগ বিশেষজ্ঞ নারীর বন্ধ্যাত্বের কারন নির্ণয় করতে যেয়ে পুরুষের বন্ধ্যাত্ব রোগটি ধরে থাকেন। এছাড়াও অনেক সময় চর্ম ও যৌণ রোগ বিশেষজ্ঞ পুরুষের বন্ধ্যাত্ব নিয়েও কাজ করে থাকেন।

চিকিৎসাঃ
রোগের কারন নির্ণয় করার পর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারন করা হয়, যেমনঃ
– সার্জারী
– হরমোন থেরাপি
– সংক্রমণ থেকে আরোগ্য , ইত্যাদি

নারীর বন্ধ্যা হওয়ার ৯ কারণ

বিবাহিত দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার বিড়ম্বনা সব সমাজেই বিদ্যমান। স্বাভাবিক দাম্পত্য জীবনে সন্তান না এলে তাকে বন্ধ্যাত্ব হিসেবে দেখা হয়। নারীর গর্ভসঞ্চার সত্ত্বেও জীবিত সন্তান প্রসব না হওয়াকেও এক প্রকার বন্ধ্যাত্ব বলা হয়। চলনু জেনে নিই যেসব কারণে নারীরা বন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছেন।

১. অনিয়মিত ঋতুস্রাবের কারণে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। সাধারণত একজন নারীর জীবনে ঋতুচক্র শুরু হওয়ার পর থেকে ২১ দিন থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে যেটি হয় সেটি নিয়মিত ঋতুস্রাব। আর যদি ২১ দিনের আগে বা ৩৫ দিনের পরে হয় তবে সেটিকে অনিয়মিত ঋতুস্রাব বলে। এর আরও প্রধান কিছু সমস্যা যেমন: ঋতুস্রাবের সময় ব্যথা, যৌন মিলনে ব্যথা, তলপেটে ব্যথা ইত্যাদি।

২. জরায়ু মুখের অসুখ, জরায়ুর অসুখ, জন্মগতভাবে জরায়ু না থাকা বা ছোট জরায়ু, এক বা দুই শৃঙ্গযুক্ত জরায়ু, দুই ভাগে বিভক্ত জরায়ু, জরায়ুতে জীবাণুর সংক্রমণ (টিবি, গনোরিয়া), জরায়ুতে টিউমার প্রভৃতি কারণেও একজন নারী বন্ধ্যা হতে পারেন।

৩. নারীদের বন্ধ্যাত্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ অ্যান্ডোমেট্রিওসিস, যা সাধারণত ৩০-৩৫ বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যেই বেশি দেখা দেয়। বিলম্বে বিবাহ ও সন্তান নিতে বিলম্ব করা এর একটি প্রধান কারণ।

৪. ডিম্বনালীর অসুখের কারণেও বন্ধ্যাত্ব হতে পারে। ডিম্বনালীর প্রধান কাজ ডিম্বাণু ও শুক্রকিটের মিলনের স্থান ঠিক করা এবং ভ্রুণের বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় হরমোনের সৃষ্টি করা। এই ডিম্বনালী যখন জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত হয় তখন এর শ্লেষ্মাঝিল্লির ক্ষতি হয়।

৫. আমাদের দেশে টিবি, গনোরিয়া, স্ট্যাফাইলোকক্কাস, স্ট্রেপ্টোকক্কাস, বিকোলাই প্রভৃতি জীবাণুর সংক্রমণ ডিম্বনালীতে বেশি হয়ে থাকে। শল্যচিকিৎসার কারণেও ডিম্বনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। যেমন: ডি অ্যান্ড সি, অ্যান্ডোমেট্রিয়াল বাইয়পসি বা অ্যাপেন্ডিক্সের অপারেশনের ফলেও ডিম্বনালীর অসুখ হতে পারে।

৬. হরমোনের অভাবেও বন্ধ্যাত্ব দেখা দেয়। মহিলাদের ঋতুচক্র এবং ডিম্বাণু নির্গত হওয়া নানা অন্তঃস্রাবি গ্রন্থির হরমোনের ওপর নির্ভরশীল। এর যেকোনো হরমোনের অভাবে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিতে পারে। যেমন: হাইপোথেলামসের আঘাত, টিউমার, পিটুইটারি গ্রন্থির টিউমার, অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির টিউমার, থাইরয়েড গ্রন্থির অসুখ, ডিম্বাশয়ের অসুখ-টিউমার, সিস্ট ইত্যাদি কারণে হরমোনের গোলমাল দেখা দিয়ে থাকে।

৭. নারীর শরীরজাত অ্যান্টিবডি অনেক সময় পুরুষের শুক্রকিট ধ্বংস করে দেয় বা শুক্রকিটের জরায়ুর মুখে প্রবেশে বাধার সৃষ্টি করে। এই অ্যান্টিবডি পুরুষের রক্ত বা বীর্যে এবং মেয়েদের রক্ত বা জরায়ুমুখের শ্লেষ্মাঝিল্লিতে পাওয়া যায়।

৮. বন্ধ্যাত্বের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, মানসিক চাপ। অত্যধিক মানসিক চাপ নারীকে বন্ধ্যা করে দিচ্ছে বলে চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা মত দিয়েছেন। এমনকি সন্তান লাভের অদম্য বাসনাও সন্তান ধারণে বাধার সৃষ্টি করতে পারে। এজন্য সন্তান লাভে ইচ্ছুক দম্পতিদের সম্পূর্ণ স্বাভাবিক মানসিক ও শারীরিক অবস্থাতেই চেষ্টা করা উচিত। তাই কোনো ভয়, আতঙ্ক ও দুশ্চিন্তা না করে সৃষ্টিকর্তার কাছে সন্তান লাভের চেষ্টা করলে তারা সফল হতে পারবেন।

৯. পুষ্টির অভাব বা অতিরিক্ত মেদবহুল, বা তলপেটে চর্বি জমার কারণেও নারী বন্ধ্যা হতে পারেন। তাই স্বাস্থ্য সচেতন ও খাবার গ্রহণের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। সমস্যা থাকলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

সবশেষে বলা যায়, পুরুষের বন্ধ্যাত্ব একটি জটিল বিষয়। প্রতিটি নিঃসন্তান দম্পতির উচিত স্বামী স্ত্রী দুজনেরই প্রয়োজনীয় পরীক্ষা নিরীক্ষা করা। তাহলে পুরুষের বন্ধ্যত্ব রোগটি ধরা পড়বে এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে তারা সন্তান ধারনে সক্ষম হবে।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।
একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

চিকিৎসকের মুঠোফোন : ইমো/হোয়াটস অ্যাপ : 01762240650

শ্বেতীরোগ, যৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

Loading

শেয়ার করুন

Leave a Reply