ফরিদগঞ্জ সমাজসেবা অফিসে টাকা ছাড়া মিলেনা সেবা, অফিস সহকারী বারীর হাতে সকল কলকাঠি

মোঃ আনিছুর রহমান সুজন :
সমাজের অনগ্রসর জনগোষ্টীর জীবনমান উন্নয়নে সরকারিভাবে বিভিন্ন সহায়তামূলক ভাতা দিয়ে থাকে সমাজ সেবা অধিদপ্তর। এই দপ্তরের উপজেলা পর্যায়ে এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়ে রয়েছে কার্যক্রম পরিচালনার অফিস।

সমাজসেবা মন্ত্রণালয় তথ্যমতে প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছে ইউনিয়ন সমাজ কর্মীর অফিস ।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে ইউনিয়নে পাওয়া যায়নি ইউনিয়ন সমাজকর্মীদের। তথ্যমতে ইউনিয়ন সমাজকর্মীরা উপজেলা সদরে থেকে প্রতিবন্ধি,বয়স্ক, বিধবা এমনকি উপবৃত্তি থেকে ও ৫ হাজার টাকা থেকে ১০হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষের বিনিময়ে সেবা দিয়ে থাকেন।

উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে সেবার জন্য উপজেলায় আসলে, অফিসে অবস্থান করা সমাজ কর্মীরা টাকার বিনিময়ে( লেনদেনের চুক্তিতে) সেবার কন্ট্যাক্ট করে থাকেন। শুধু তাই নয়! প্রতিবন্ধি নাহয়েও কর্মকর্তাদের অবৈধ সুযোগে বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত উপকারভোগী, ব্যয় হচ্ছে সরকারের কোটি কোটি টাকা। উপজেলা বালিথুবা পূর্ব ইউনিয়নের শিবলি পিতা. আবদুল হাকিম ৭ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রতিবন্ধি কার্ড করতে সক্ষম হয়েছেন।

শিবলির ভাই আরিফ হোসেন জানান, উপজেলা সমাজসেবা অফিসের সহকারী ফজলে বারির হাতে রয়েছে সকল কলকাঠি তার চাহিদা আরো বেশী ছিল, তবে আমি অনেক কষ্টে ৭ হাজার টাকা দিয়ে কার্ডটি করতে রাজি করিয়েছি। পৌরসভার বড়ালী গ্রামের সবুজ হোসেন গাজীর বুদ্ধি প্রতিবন্ধি ছেলে ফরহাদ হোসেনের জন্য প্রতিবন্ধি ভাতার জন্য বিগত ৫ বছর ধরে চেষ্টা করে ৫এপ্রিল ২০২১ তারিখ ইস্যুকৃত প্রতিবন্ধি কার্ড পেলেও পায়নি ভাতার কার্ড। অন্যদিকে প্রতিবন্ধি না হয়েও সরকারের কোটি কোটি টাকা গচ্ছা যাচ্ছে অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারির যোগসাজসে।

অনুসন্ধানিতে প্রতিবন্ধি না হয়েও টাকার বিনিময়ে উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছেন এমন তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার পূর্বে টাকা দিতে অসমর্থ হলে , উপবৃত্তির টাকা পাওয়ার পরে অসৎ কর্মকর্তাদের টাকা দিতে হবে এমন শর্তেও উপবৃত্তির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অনগ্রসর তালিকায় এইচএসসি থাকা অবস্থায় উপবৃত্তি পেতেন সেবানন্দ্র রবি দাস ডিগ্রী ২য় বর্ষে এসেও তার শ্রেণী পরিবর্তন করা হয়নি। দেইচর গ্রামের জান্নাতুল ফেরদৌস একই সাথে শিক্ষাউপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধি ভাতা পেয়ে আসছেন। প্রতিবন্ধি নাহয়েও টাকার বিনিময়ে উপবৃত্তি ও ভাতা পেয়ে আসছেন, সাবিনা, জান্নাতুল, সালমা, সরোয়ার, জাহিদ এমনকি প্রত্যেকের মোবাইল নাম্বারে শাহজাহান নামে এক দালালের নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে।

একই মোবাইল নাম্বার ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে শাহজাহান বলেন, কেন বার বার আমার নাম্বার ব্যবহার করা হয়েছে এ বিষয়ে সমাজসেবা অফিসাররা বলতে পারবে। টাকার বিনিময়ে এসকল অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে উপবৃত্তি ও প্রতিবন্ধি কার্ডে নিয়োজিত উপজেলা সমাজ সেবার অফিস সহকারি ফজলে বারির বিরুদ্ধে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অফিস সহকারি ফজলে বারি জানান, এগুলো আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে প্রচার করা হচ্ছে।

ফিল্ড সুপারভাইজার পান্না রহমান জানান, উপবৃত্তি ও ভাতার কাজগুলো ফজলে বারি করে থাকেন। তবে কিছু ভুলভ্রান্তি হয়েছে সেগুলো সংশোধন করা হচ্ছে। উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা মাহমুদল হাসান প্রশিক্ষনে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তার স্থানে অতিরিক্ত দায়িত্বে রয়েছে হাজীগঞ্জের সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ সাহাদাত হোসেন। তিনি বলেন, এসকল বিষয়ে আমি কিছুই জানি না আমি বিভিন্ন তদন্তের বিষয়ে শুধু স্বাক্ষর করে থাকি।

জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রজত শুভ্র সরকার (ডিডি) বলেন, অভিযুক্ত বিষয়ে আপনি নিউজ করেন, এবং ভুক্তভোগিকে লিখিত অভিযোগ করতে বলেন, আমরা তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নিব।

Loading

শেয়ার করুন