কচুয়ায় ভুয়া এনআইডি তৈরি করে কিশোর-কিশোরীর বিয়ে : এলাকায় তোলপাড়

কচুয়া প্রতিনিধি  :  কচুয়ায় এক নব দম্পত্তির বিরুদ্ধে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করে বিয়ে করে ঘর-সংসার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার শাসনপাড়া গ্রামের ওয়ারিশ প্রধানীয়া বাড়িতে ওই নব-দম্পত্তি সংসার করছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বয়স কম হওয়া সত্তে¡ও এনআইডিতে কিশোরীকে বয়স বেশি দেখিয়ে বিয়ে পড়ানোর এ ঘটনায় এলাকায় বেশ তোলপাড় চলছে এবং ওই মেয়েকে ফেরত নেয়ার দাবীতে তার ওমান প্রবাসী মা ফাতেমা বেগম এলাকার মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে।

সরেজমিনে জানা গেছে, কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার মোহনপুর এলাকার অধিবাসী মো. ইরন হোসেন ও তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম ওমানে থাকার সুবাদে কচুয়া উপজেলার শাসনপাড়া গ্রামের শফিকুল ইসলামের পুত্র মো. সজিব মিয়ার পরিচয় হয়। পরিচয়ের এক পর্যায়ে তাদের সাথে টিকটকের মাধ্যমে প্রবাসী ইরন হোসেনের কিশোরী মেয়ে লামিয়া ইসলাম লিজার সাথে মো. সজিব মিয়ার পরিচয় হয় এবং উভয়ের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। পরবর্তীতে সু-চতুর  সজিব মিয়া ওমান থেকে দেশে ফিরে এসে ঢাকার বাসা থেকে লামিয়া ইসলাম লিজাকে কৌশলে এনে চাঁদপুরের বিজ্ঞ নোটারি পাবলিক কার্যালয়ের কোর্ট এফিডেবিটের মাধ্যমে ২০২২ সালের ২০ নভেম্বর বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।

এতে লামিয়া ইসলাম লিজার পরিবারের আপত্তি দেখা দিলে স্থানীয় হুমায়ুন পাটওয়ারী, সজিব খান অভি ও গন্যমান্য ব্যাক্তিবর্গদের সহায়তায় লামিয়াকে ২ মে ২০২৪  ডিভোর্সের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এক পর্যায়ে আবারো সজিব মিয়া লামিয়া ইসলাম লিজাকে ফুসলিয়ে পুনরায় ভুয়া এনআইডি কার্ড তৈরি করে ২৬শে সেপ্টেম্বর কাজী অফিসের মাধ্যমে বিয়ে করে সংসারে আবদ্ধ হয়। বিয়েতে কনে লামিয়া ইসলাম লিজার জন্ম তারিখ ১৪.০৮.২০০০ দেয়া হলেও প্রকৃত পক্ষে জন্মসনদ ও স্কুল সার্টিফিকেট সূত্রে জানা যায় তার জন্মতারিখ ১৮.০৮.২০০৯। ফলে লামিয়া ইসলাম লিজার বয়স ১৫ বছর।

লামিয়া ইসলাম লিজার মা ফাতেমা বেগম জানান, আমার একমাত্র মেয়ে লিজা এখনও কিছুই বুঝে নি। তাকে বিভিন্নভাবে ফুসলিয়ে ও প্রলোভন দেখিয়ে সজিব বাড়ি থেকে নিয়ে আসে। এই বিয়ে ভুয়া, আমি মানিনা। আমি আমার মেয়েকে ফেরত পেতে এলাকাবাসী ও প্রশাসনের সহযোগিতা চাই। প্রয়োজনে আমি মেয়েকে ফেরত পেতে আদালতে মামলা দায়ের করবো।

স্থানীয় শাসনপাড়া গ্রামের অধিবাসী মো. হুমায়ুন পাটওয়ারী বলেন, বিষয়টি আমি আমাদের নেত্রী নাজমুন নাহার বেবী আপা ও যুবদলের সাধারন সম্পাদক হাবিবুন নবী সুমন ভাইয়ের মাধ্যমে জেনে উভয়ের সাথে কথা বলে মেয়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তে মিমাংশা করি। প্রায় চারমাস আগে মেয়েটি তার মায়ের মাধ্যমে দেবিদ্বারে চলে যায়। বর্তমানে আবার শুনেছি মেয়েটি ছেলের বাড়িতে এসে ঘর সংসার করছে। তবে কিভাবে কোন প্রক্রিয়ায় সংসার করছেন তা আমার জানা নেই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. হুমায়ুন কবির পাটওয়ারী সুজন জানান, দেবীদ্বারের একটি মেয়ে আমাদের গ্রামে এসেছে জেনেছি। পরবর্তীতে মেয়ের পরিবারের ইচ্ছায় প্রায় চারমাস আগে ওই মেয়েকে তার মায়ের হাতে তুলে দিয়েছি। পরবর্তীতে শুনেছি ঘটনার তিনদিন পর মেয়েটি আবার পুনরায় ছেলের বাড়িতে চলে এসেছে। তবে বর সজিব মিয়া ও কনে লামিয়া ইসলাম লিজা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সঠিক প্রক্রিয়ায় বিয়ে করেই তারা সংসার জীবনে আবদ্ধ হয়েছেন।

Loading

শেয়ার করুন