হিমোফিলিয়া রোগের প্রতিকার জেনে নিন
বাংলাদেশ একটি উন্নয়নশীল গরিব দেশ। দেশের শতকরা ৮০ ভাগ জনগণই গরিব এবং জীবন ধারণের জন্য সব ধরনের উন্নত সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। যেখানে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং চিকিৎসার মতো মৌলিক চাহিদাগুলোই অপূর্ণ থেকে যায়, সেখানে হিমোফিলিয়ার মতো একটি বিরল স্থায়ী নিরাময়ের অযোগ্য ও ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসার সুযোগ নেই বললেই চলে।
হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগী, রোগীর অভিভাবক, চিকিৎসক ও সচেতন শুভাকাঙ্ক্ষীরা সংগঠিত হয়ে বাংলাদেশে হিমোফিলিয়া সোসাইটি গড়ে তুলেছেন। নিঃসন্দেহে এ উদ্যোগ প্রশংসার দাবিদার। তাদের এ মহৎ উদ্যোগ আমাদের এ গরিব দেশের জনগণের বুকে আশার আলো জ্বালাবে এ প্রত্যাশা আমাদের সবার।
হিমোফিলিয়া কী
হিমোফিলিয়া একটি রক্তক্ষরণজনিত সমস্যা যা বংশাণুক্রমে হয়ে থাকে পুরুষদের। প্রতি ১০,০০০ জনসংখ্যার মধ্যে একজন হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আমরা লক্ষ্য করে থাকি যে, কোনো জায়গা কেটে গেলে সাময়িকভাবে ওই স্থান থেকে কিছুক্ষণ রক্তক্ষরণ হতে থাকে এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ রক্তক্ষরণ আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যায়। হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে এ রক্তক্ষরণ আপনাআপনি বন্ধ হয় না। রক্তক্ষরণ হয়ে পড়ে প্রলম্বিত, এমনকি কখনো কখনো কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এ রক্তক্ষরণ আদৌ বন্ধ হতে চায় না।
কেন এ প্রলম্বিত রক্তক্ষরণ
রক্তক্ষরণ যাতে প্রলম্বিত না হয় সেজন্য আমাদের শরীরের মধ্যে রয়েছে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে রক্ত বন্ধ করতে সাহায্য করে। এ স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়াকে বলা হয় তঞ্চন প্রক্রিয়া বা ইষড়ড়ফ পষড়ঃঃরহম গবপযধহরংস। স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া অনেক জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ১৩টি পষড়ঃঃরহম ভধপঃড়ৎ সমন্বিতভাবে রক্ত জমাট বাঁধতে সহায়তা করে থাকে। হিমোফিলিয়া রোগের ক্ষেত্রে এ ১৩টি পষড়ঃঃরহম ভধপঃড়ৎ-এর মধ্যে পষড়ঃঃরহম ঠওওও অথবা পষড়ঃঃরহম ওঢ এর ঘাটতি থাকে। এ ঋধপঃড়ৎ-এর ঘাটতিই হিমোফিলিয়া রোগীদের রক্তক্ষরণ বিলম্বিত হওয়ার প্রধান কারণ।
হিমোফিলিয়ার ধরন
১. হিমোফিলিয়া- অ : ঋধপঃড়ৎ ঠওওও-এর ঘাটতির জন্য ঐধবসড়ঢ়যরষরধ-অ হয়ে থাকে। একে বলা হয় ঈষধংংরপধষ ঐধবসড়ঢ়যরষরধ.
২. হিমোফিলিয়া-ই : যা ঋধপঃড়ৎ ওঢ এর ঘাটতির জন্য হয়ে থাকে। একে ঈযৎরংঃসধং উরংবধংব ও বলা হয়ে থাকে।
বংশানুক্রমে হিমোফিলিয়া
হিমোফিলিয়া সাধারণত পুরুষদের রোগ। মহিলারা এ রোগের বাহক মাত্র তারা সাধারণত এ রোগে ভোগেন না।
পুরুষ এবং মহিলার ক্ষেত্রে জেনেটিক লেভেলে পার্থক্য রয়েছে। একজন পুরুষের শরীরে সেক্স ক্রোমোজম থাকে ঢণ এবং মহিলার শরীরে থাকে ঢঢ, হিমোফিলিয়া রোগ ঢ ক্রোমোজমের মাধ্যমে বংশানুক্রমে সঞ্চারিত (ঞৎধহংসরঃঃবফ) হয়। মহিলাদের ক্ষেত্রে একটি ঢ হিমোফিলিয়া বহন করলেও অন্য ঢটি সুস্থ থাকে বিধায় প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর তৈরিতে সক্ষম তাই তারা এ রোগে ভোগেন না। পুরুষদের যেহেতু একটি ঢ ক্রোমোজম থাকে তাই এটি অসুস্থ হলে প্রয়োজনীয় ফ্যাক্টর তৈরি হয় না ফলে তারা হয় আক্রান্ত। পারিবারিক ইতিহাস এক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগের ভাই, মামা, নানা, খালাতো ভাইদের ও এ রোগ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
বংশানুুক্রম ছাড়া হিমোফিলিয়া
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে যে, প্রতি ৩ জন হিমোফিলিয়া রোগের মধ্যে অন্তত একজন রোগী বংশানুুক্রমে সঞ্চারিত না হয়ে নতুনভাবে আক্রান্ত হয়।
হিমোফিলিয়া তীব্রতা ও প্রকারভেদ
সুস্থ দেহে ফ্যাক্টর ঠওও বা ওঢ এর মাত্রা থাকে ৬০-১৫০ ভাগ পর্যন্ত। ২৫-৫০% পর্যন্ত থাকলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে রক্তক্ষরণ বন্ধ হয়ে যায়
হিমোফিলিয়া রোগের সাধারণ লক্ষণ
১. প্রলম্বিত রক্তক্ষরণের প্রবণতাই হচ্ছে হিমোফিলিয়া রোগের প্রধান লক্ষণ।
২. সাধারণত বাচ্চার বয়স ৬ মাসের আগে এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় না। তবে অনেক সময় বাচ্চা ভূমিষ্ট হওয়ার পর নাড়ি কাটা থেকে প্রচ- রক্তপাত এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে।
৩. বাচ্চা যখন হাত পা ছুড়তে/হামাগুড়ি দিতে শিখে তখন অস্থি সন্ধিতে স্বতঃস্ফূর্ত রক্তক্ষরণ হয়ে হাঁটু, কনুই, পায়ের গোড়ালি ফুলে যায় ও পেশিতে রক্তক্ষরণের ফলে কালশিরে দাগ দেখা যায়। তখন বাচ্চা প্রচ- কান্নাকাটি করে, হাত পা ছোড়া ও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়।
৪. তাছাড়া ছেলেবেলায় খেলতে গিয়ে, পড়ে গিয়ে ব্যথা হওয়া, হাঁটু ফুলে যাওয়া, কেটে গিয়ে রক্ত বন্ধ না হওয়া, খৎনা করার পর রক্তক্ষরণ বন্ধ না হওয়া এ রোগের লক্ষণ প্রকাশ করে।
রোগ নির্ণয়
স্বতঃস্ফূর্ত রক্তক্ষরণ, আঘাত বা সার্জারির পর প্রলম্বিত রক্তক্ষরণ এবং চড়ংরঃরাব ভধসরষু যরংঃৎড়ু হিমোফিলিয়া রোগ সন্দেহ করার জন্য যথেষ্ট। ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মাধ্যমে চূড়ান্তভাবে রোগটি শনাক্ত করা হয়। যে পরীক্ষার প্রয়োজন তা হলো : ইঞ, ঈঞ, চঞ, অচঞঞ, ঋধপঃড়ৎ ধংংধু, ঞএঞ.
চিকিৎসা
ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি না হলেও হিমোফিলিয়া একটি জটিল রোগ। এ রোগের স্থায়ী কোনো নিরাময়যোগ্য চিকিৎসা নেই, কিন্তু তাৎক্ষণিকভাবে উপসর্গ উপশমের ব্যবস্থা অবশ্যই রয়েছে। সময়মতো রোগটি শনাক্ত করা না হলে এবং রক্তক্ষরণ বন্ধ করে সম্ভাব্য জটিলতার হাত থেকে রক্ষা করতে না পারলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে রোগীর তাৎক্ষণিক মৃত্যুও হতে পারে অথবা ধীরে ধীরে যেতে পারে অভিশপ্ত পঙ্গুত্বের দিকে।
হিমোফিলিয়া রোগের চিকিৎসা প্রধানত প্রতিরোধমূলক। এ রোগে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। রক্তক্ষরণ বন্ধ করা, সম্ভাব্য জটিলতার চিকিৎসা করা এবং পুনর্বাসন করাই এ রোগ নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায়। হিমোফিলিয়া একটি আজীবন রোগ। তবে ভেঙে পড়লে চলবে না- মনে রাখতে হবে সঠিক সময়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করলে হিমোফিলিয়া আক্রান্ত একটি শিশুর আর দশটি স্বাভাবিক শিশুর মতো বেড়ে উঠতে এবং স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে।
চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন
হিমোফিলিয়া এ-এর জন্য (ফ্যাক্টর এইট) হিমোফিলিয়া বি-এর জন্য (ফ্যাক্টর নাইন)
অহঃর ঐবসড়ঢ়যরষরপ (ঋধপঃড়ৎ ঠওওও) ওহলবপঃরড়হ অহঃর ঐবসড়ঢ়যরষরপ (ঋধপঃড়ৎ ঠওওও) ওহলবপঃরড়হ
ঈৎুড়ঢ়ৎবপরঢ়রঃধঃব চঈঈ (চৎড়ঃযৎড়সনরহ ঈড়সঢ়ষবী ঈড়হপবহঃৎধঃব
ঋঋচ (ঋৎবংয ঋৎড়ুবহ চষধংসধ) ঋঋচ (ঋৎবংয ঋৎড়ুবহ চষধংসধ)
ঋৎবংয যিড়ষব নষড়ড়ফ ঋৎবংয যিড়ষব নষড়ড়ফ
লক্ষণগত চিকিৎসা
১. রক্তক্ষরণের জায়গা ব্যান্ডেজ করা। প্রয়োজনে অহঃর ঐবসড়ঢ়যরষরপ ঋধপঃড়ৎ ওহলবপঃরড়হ প্রয়োগ করা।
২. বেশি রক্তক্ষরণ হলে বিশুদ্ধ রক্ত সঞ্চালন করা।
৩. বেদনানাশক ওষুধ দেয়া কিন্তু অ্যাসপিরিন গোত্রের কোনো ওষুধ দেয়া যাবে না কারণ এর রক্তক্ষরণ প্রবণতা আছে এবং রক্ত জমাট বাঁধতে দেয় না।
৪. অ্যামাইনোক্যাপ্রেয়িক এসিডের সহায়তায় দাঁত তুলতে হবে যদি প্রয়োজন হয় এবং অবশ্যই কোনো ভালো হাসপাতালে তা করতে হবে।
৫. যে কোনো শল্য চিকিৎসার আগে ফ্যাক্টর রিপ্লেসমেন্টের ব্যবস্থা নিতে হবে।
৬. হাঁটু বা অন্য অস্থিসন্ধি ফুলে গেলে ২৪-৩৬ ঘণ্টা বিশ্রামে থাকতে হবে এবং তারপর যতশীঘ্র সম্ভব নাড়াচড়া না করলে অস্থিসন্ধি শক্ত হয়ে যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপির সাহায্য নিতে হবে।
হিমোফিলিয়া রোগীর মানসিক এবং ব্যক্তিত্ব বিকাশের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। অভিভাবকের অবহেলা বা অযত্ন এসব রোগীর মনে গভীর দাগ কাটতে পারে। অতি রক্ষণশীলতা পরিহার করে ঝুঁকিহীন বিনোদনমূলক ব্যবস্থা করা এবং সামাজিকভাবে যথাযথ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। হালকা ব্যায়াম এবং সংঘর্ষপূর্ণ নয় এমন খেলাধুলা অনুমোদন করা যেতে পারে।
প্রতিরোধ
হিমোফিলিয়া রোগে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীকে যে কোনো রকম আঘাত এড়িয়ে চলতে হবে। বাড়িতে নিজেরা ইনজেকশন দেয়ার প্রশিক্ষণ নিতে হবে। যদি সম্ভব হয় মারাত্মকভাবে আক্রান্ত রোগীকে নিয়মিত ফ্যাক্টর দিতে হবে। সব হিমোফিলিয়া রোগীকে নিয়মিত হিমোফিলিয়া সোসাইটিতে (১৭/২-সি, তল্লাবাগ, শুক্রবাদ, ঢাকা-১২০৭) পাঠাতে হবে যাতে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও উপদেশ তারা পেতে পারে।
কোথায় করাবেন চিকিৎসা
হিমোফিলিয়া রোগীর চিকিৎসা বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে করে থাকেন রক্তরোগ বিশেষজ্ঞ বা হেমাটোলজিস্টরা। সাধারণ পর্যায়ে যে কোনো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তারই রোগটি সম্পর্কে ভালোভাবে অবহিত থাকলে এ রোগের চিকিৎসা করতে পারেন। সরকারি পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের হিমাটোলজি বিভাগ এবং জাতীয় ক্যান্সার হাসপাতালের হেমাটোলজি বিভাগে এ রোগের চিকিৎসা করা হয়। বেসরকারি পর্যায়ে রক্তরোগ বিশেষজ্ঞরা নিজ দায়িত্বে যে কোনো সুবিধাজনক স্থানে চিকিৎসা করতে পারেন।
সারা পৃথিবীতে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়াসহ অন্যান্য রক্তক্ষরণজনিত রোগে ভুগছে। শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি এমন রোগীর সংখ্যা আরো বেশি। ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব হিমোফিলিয়ার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতি লাখে ২০ জন মানুষ হিমোফিলিয়া রোগে আক্রান্ত।
হিমেফিলিয়া কী?
হিমোফিলিয়া একটি বংশানুক্রমিক জিনগত রোগ। মানবদেহে রক্ত জমাট বাঁধার জন্য কিছু বিশেষ ব্যবস্থা আছে। রক্ত জমাট বাঁধার প্রক্রিয়ায় কাজ করে রক্তের অণুচক্রিকা এবং বেশ কয়েকটি ফ্যাক্টর (বিষয়)। এদের মধ্যে বিশেষ দুটি ফ্যাক্টর কম মাত্রায় উৎপাদিত হলে রক্তের জমাট বাঁধায় সমস্যা দেখা দেয়। এ রকম পরিস্থিতিতে শরীরের অভ্যন্তরে নিজে নিজেই রক্তক্ষরণ শুরু হতে পারে। একেই বলে হিমোফিলিয়া।
মূলত মেয়েরা এই রোগের জিন বহন করে, পুরুষরা আক্রান্ত হয়। তবে অল্প কিছু ক্ষেত্রে মেয়েরাও আক্রান্ত হতে পারে।
হিমোফিলিয়া দুই ধরনের—হিমোফিলিয়া এ, হিমোফিলিয়া বি। শতকরা ৮৫ ভাগ হিমোফিলিয়া রোগী হিমোফিলিয়া এ-তে আক্রান্ত। হিমোফিলিয়া বি-এর আরেক নাম ক্রিসমাস ডিজিজ।
লক্ষণ
অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণই হলো হিমোফিলিয়ার প্রধান লক্ষণ।
শিশুদের খতনা করার পর অনেক সময় দেখা যায় রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছে না। দাঁত পড়ার সময় প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। অনেকের দেখা যায় হামাগুড়ি দেওয়ার কারণে হাঁটু ফুলে যায় অথবা সামান্য আঘাতে গিড়া ফুলে যায়। অস্ত্রোপচারের পর বা দুর্ঘটনাজনিত আঘাতের পর রক্তক্ষরণ বন্ধ হয় না।
রোগের মাত্রা ও রোগের মেয়াদ অনুযায়ী প্রকাশ পেতে পারে আরো কিছু লক্ষণ। দীর্ঘদিন ধরে অস্থিসন্ধিতে রক্তক্ষরণের কারণে অস্থিসন্ধির কর্মক্ষমতা নষ্ট হতে পারে। এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য অংশেও রক্তক্ষরণ হতে পারে। এমনকি মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে, যেটা খুবই মারাত্মক। এতে সঠিক সময়ে সঠিক ব্যবস্থা না নিলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই সময় থাকতেই রোগটি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারলে এবং সে অনুযায়ী সতর্ক থাকলে মৃত্যুর ঝুঁকিটা কমানো যায়। রক্তক্ষরণের মাত্রা নির্ভর করে রক্তে রক্ত জমাট বাঁধার উপাদান (ফ্যাক্টর ৮ ও ৯) কেমন পরিমাণে উপস্থিত আছে তার ওপর।
পরীক্ষা
রক্তের ফ্যাক্টর দুটির পরীক্ষা।
রক্তের জমাট বাঁধার ক্ষমতা পরীক্ষা।
চিকিৎসা
হিমোফিলিয়ার স্থায়ী কোনো চিকিৎসা নেই। শিরাপথে ইনজেকশনের মাধ্যমে সেই ফ্যাক্টর শরীরে প্রবেশ করানোই মূল চিকিৎসা। রক্তক্ষরণের কারণে অস্থিসন্ধিতে সমস্যা দেখা দিলে ফিজিওথেরাপি নিতে হয়। নিয়মিত চিকিৎসা নিলে এবং সাবধানতার সঙ্গে জীবনযাপন করলে দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্রায় স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব।
হিমোফিলিয়া রোগীদের বিশেষ কিছু সাবধানতা মেনে চলতে হয়। শরীরে আঘাত লাগতে পারে এ রকম কোনো ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অংশগ্রহণ না করা, মাংসে ইনজেকশন না নেওয়া, যেকোনো ধরনের অস্ত্রোপচারের পর রক্তরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া, ব্যথানাশক ওষুধ বা রক্ত তরল করে এ রকম ওষুধ (যেমন এসপিরিন) না খাওয়া ইত্যাদি।
হিমোফিলিয়ার চিকিৎসা ও ওষুধ বাংলাদেশে সম্ভব হলেও খুব একটা সুলভ নয়। সচেতন হলে এই রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকখানি কমে যায়। তাই হিমোফিলিয়া সম্পর্কে সবার সচেতন থাকা একান্ত জরুরি।
শারীরিক অক্ষমতার কারণ ও প্রতিকার
পুরুষের শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতা অথবা পুরু/ষত্ব হীনতা আজকাল প্রকট আকার ধারণ করছে। একদম তরুণ থেকে শুরু করে যে কোন বয়সী পুরুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে এমন যৌ/ন সমস্যা।
অনেক পুরুষ অকালেই হারিয়ে ফেলছেন নিজের সক্ষমতা, উঠতি বয়সের যুবকরা রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে দাম্পত্যে অশান্তি, সন্তানহীনতার হার এবং সত্যি বলতে কি বাড়ছে ডিভোর্সও।
কিন্তু কারণ কি পুরুষদের এই ক্রমশ শারীরিকভাবে অক্ষম বা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদের বর্তমানের আধুনিক জীবনযাত্রার মাঝেই।
হ্যাঁ, আপনার প্রতিদিনের স্ট্রেসভরা অস্বাস্থ্যকর জীবন, আপনার নিজের কোনও একটা ভুলই হয়তো আপনাকে ক্রমশ ঠেলে দিচ্ছে পুরুষত্বহীনতার দিকে। অথবা হতে পারে আপনার শরীরে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যৌ/ন হরমোনের পরিমাণ, যা আপনার সংসারকে করছে অশান্তিময়।
কেন এমন হচ্ছে সেটা জানার আগে জানতে হবে পুরুষের একান্ত দুর্বলতাগুলো কী কী বা কেমন হতে পারে। তা জেনে নিলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার সমস্যাটা কোথায়।
শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতার বিষয়টিকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-
১. ইরেকশন ফেইলিউর : পুরুষ লি/ঙ্গের উত্থানে ব্যর্থতা। এতে করে লিং/গের উত্থানে সমস্যা তৈরি, যাতে করে দীর্ঘদিন যাবত লিং/গ গরম হয় না এবং সহ/বাসের উপযোগী হয় না।
২. পেনিট্রেশন ফেইলিউর : লি/ঙ্গের যো/নিদ্বার ছেদনে ব্যর্থতা, বা যো/নিতে প্রবেশের মত পর্যাপ্ত উথিত না হওয়া। এতে করে মাঝে মাঝে লিং/গ উত্থিত বা গরম হয় আবার গরম হয়েও শীতল হয়ে যায়। আবার গরম হলেও স্ত্রী যো/নীতে প্রবেশ করা মাত্রই তা নরম হয় যায়, ফলে সংসারে বাড়ে অশান্তি। বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়তে থাকে।
৩. প্রি-ম্যাচুর ইজাকুলেশন : সহ/বাসে দ্রুত বী/র্য-স্খলন, তথা স্থায়িত্বের অভাব। এতে করে পুরুষের লিং/গ গরম হলেও তা খুব দ্রুতই পতন হয় বা বী/র্য আউট হয়ে যায়। তাতে নারী এবং কেউ পরম সুখলাভ করতে পারে না।
এ সমস্যার জন্য নাইট কিং পাউডার ও সিরাপ বেশ কার্যকরী ঔষধ। এই ঔষধ সেবনে উপরোক্ত সমস্যার সমাধান হবে, ইনশাল্লাহ।
কারণগুলি কি কি হতে পারে ?
প্রাকৃতিক বা শারীরিক কারণগুলোর মাঝে মুখ্য হলো-
১. ডায়াবেটিস,
২. লি/ঙ্গে জন্মগত কোনওপ্রকার ত্রুটি,
৩. সে/ক্স হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,
৪. গনোরিয়া বা সিফিলিসের মত যৌ/নরোগ ইত্যাদি।
তাছাড়াও প্রাকৃতিক শারীরিক সমস্যা ছাড়াও প্রচণ্ড কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি, দূষিত পরিবেশ, ভেজাল খাওয়া দাওয়া, কম বিশ্রাম ও ব্যায়াম ছাড়া অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি অনেক কারণই আছে ক্রমশ যৌ/ন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পেছনে।
আবার অতিরিক্ত যৌ/ন সম্পর্কে যাওয়া, অতিরিক্ত মা/স্টার/বেট বা হ/স্তমৈ/থুন করা, যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাবিজাবি ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণকে অবহেলা করলেও চলবে না।
এছাড়া বয়স জনিত অসুস্থতা, সঙ্গিনীর সাথে বয়সের পার্থক্য বা সঙ্গিনীকে পছন্দ না করা, এইডসভীতি, পর্যাপ্ত যৌ/ন জ্ঞানের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ যৌ/নাসনও অক্ষমতা বা দুর্বলতার জন্য দায়ী হতে পারে।
কী কি করবেন ?
প্রথমেই যা করবেন, সেটা হলো নিম্নোক্ত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। লজ্জা না করে নিজের সমস্ত সমস্যা খুলে বলুন ও ডাক্তারের পরামর্শ মত প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা নিন।
এতে লজ্জার কিছুই নেই। একটাই জীবন। লজ্জার চাইতে নিজেকে সুস্থ ও সক্ষম রাখা জরুরী। তাই দ্বিধাহীন চিত্তে যোগাযোগ করুন। আপনার সমস্যা অনুসারে আপনাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে।
আপনার ডায়াবেটিস থাকলে প্রয়োজনীয় সকল নিয়ম কানুন মেনে চলুন।
নিজের জীবনধারাকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনে বদলে ফেলুন। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান, চেষ্টা করে কাজের চাপের মাঝেও বিশ্রাম নিতে। আপনার শরীর যখন সুস্থ ও সক্ষম থাকবে, যৌনজীবনও থাকবে সুন্দর।
সঙ্গীর সাথে রোমান্টিক জীবনের উন্নতি করুন। এক ঘেয়ে যৌ/ন জীবনে নানান রকমের চমক ও আনন্দ নিয়ে আসুন। তাঁকেও বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন যে নতুন চমক এলে আপনার মানসিকভাবে সাহায্য হবে। রোমান্টিক বেডরুম, আকর্ষণীয় অন্তর্বাস, সে/ক্স টয় ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।
যদি সঙ্গীকে অপছন্দ করার কারণে সমস্যা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন সঙ্গীকে ভালবাসতে। তার সাথে দূরে কোথাও নিরিবিলি বেড়াতে যান, তাঁকে গভীর ভাবে জানার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে তার প্রেমে পড়ার চেষ্টা করুন।
মানসিকভাবে প্রেমে পরলে শরীরটাও সাড়া দেবে। একটা জিনিষ মনে রাখবেন, বাস্তবের নারীর সাথে সিনেমার নায়িকা বা প/র্ণ স্টারদের মিল খুঁজতে যাবেন না। নিজের দিকে তাকান, নিজের সাধারণত্ব দেখুন। দেখবেন, সঙ্গীকেও আর খারাপ লাগছে না।
কী করা উচিত নয় ?
অতিরিক্ত মাস্টারবেট করার অভ্যাস অবিলম্বে ত্যাগ করুন। আর যাদের স্ত্রী আছে তাঁরা স্ত্রীর সাথেই যৌ/নজীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।
বাজারে সাময়িকভাবে যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, যেগুলো সেবনে ২৪ ঘণ্টার জন্য যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ে। এইধরনের ওষুধ মোটেও ব্যবহার করবেন না। এতে সাময়িক ক্ষমতা বাড়লেও, ক্রমশ আসলে ক্ষমতা কমতেই থাকবে।
যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ
যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। তাই প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যৌ/ন রোগ কী?
যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন :
১. সহ/বাসে অসমার্থতা।
২. দ্রু/ত বী/র্যপাত।
৩. অসময়ে বী/র্যপাত।
৪. সহ/বাসের আগেই বী/র্যপাত। অর্থাৎ নারীদেহ কল্পনা করলেই বী/র্যপাত হয়ে যাওয়া।
৫. প্রস্রাবের সাথে বী/র্যপাত।
৬. প্রস্রাবের বেগ হলেই বী/র্যপাত। স্বপ্নদোষ। মেহ রোগ।
৭. যৌ/নবাহিত রোগ। যেমন. গনোরিয়া, ক্লামিডিয়া, হার্পিস ইত্যাদি।
ওপরের ছয় নম্বর পর্যন্ত রোগের চিকিৎসা এক প্রকারের। আর তা হচ্ছে : নাইট কিং নিয়মিত সেবন করা। কয়েক মাস সেবন করলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।
নাইট কিং খুব ভালো মানের ঔষধ। যা সেবন আপনি দ্রুত বী/র্যপাত থেকে মুক্তি পাবেন। আর সাত নম্বর রোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে দীর্ঘদিন যাবত ঔষধ সেবন করতে হবে।
সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।
ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :
ডা.হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস) হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর। ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান। মুঠোফোন: চিকিৎসক) 01762240650
(সকাল দশটা থেকে রাত্র দশটা।
নামাজের সময় কল দিবেন না।)
ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com
সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।
শ্বেতীরোগ, একজিমা, যৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।
আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা
আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ
আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা
আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা
আরো পড়ুন : নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা