এলার্জির কারণ ও প্রতিকার

এলার্জি বাংলাদেশের লাখ লাখ মানুষের কাছে এক অসহনীয় ব্যাধি। এলার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য ও ওষুধের ভীষণ প্রতিক্রিয়া ও শ্বাসকষ্ট হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্যতম অসুবিধা করে, আবার কারো ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলে।

এলার্জি কি?
মানুষের শরীরে এক একটি রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেম আছে। কোন কারণে এই ইমিউন সিস্টেমে গণ্ডগোল দেখা দিলে এলার্জির বহির্প্রকাশ ঘটে। কখনও কখনও আমাদের শরীর ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকেও ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধের চেষ্টা করে। সাধারণত ক্ষতিকর নয় এমন বস্তুর প্রতি শরীরের এ অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াই এলার্জি।

এলার্জি আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষের কাছে এক অসহনীয় সমস্যার নাম। এলার্জিতে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য বা ঔষুধের উপর ভীষণ প্রতিক্রিয়া এমনকি শ্বাসকষ্টও হতে পারে। কারও কারও ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্য অসুবিধা সৃষ্টি করে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলতে পারে। ঘরের ধুলাবালি, ফুলের ঘ্রান, গরুর মাংস, চিংড়ি, ইলিশ, গরুর দুধ ইত্যাদি সাধারন ব্যাপারে গা চুলকানি শুরু হলে অথবা চামড়ায় লাল লাল চাকা হয়ে ফুলে ওঠলে ধরে নিতে হবে আপনার এলার্জি আছে।

এলার্জি কেন হয়?
যদিও এলার্জি একটি বহুল প্রচলিত শব্দ কিন্তু এই এলার্জি সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সঠিক কোন ধারণা নেই। শ্বাস কষ্ট, এক্জিমা ইত্যাদি বহু চর্মরোগেরই কারণ এলার্জি। নিম্নলিখিত বিভিন্ন কারনে এলার্জি হতে পারে। ঘরের জমানো ধুলো হাপানি জনিত এলার্জির জন্য একটি অন্যতম কারণ। ঘরের ধুলোতে মাইট নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র জীবানু থাকে যা শতকরা প্রায় ষাট শতাংশ ক্ষেত্রে এলার্জি সৃষ্টির জন্য দায়ী।

সে জন্যে যারা হাপানি জনিত এলার্জি সমস্যায় ভোগেন তারা ঘরের ধুলো সবসময় এড়িয়ে চলতে হবে বিশেষ করে ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময়। ঘরের কম্বল, পর্দা, তোষক, বালিশ, আপবাবপত্র প্রভৃতিতে যে ধুলো জমে, তা পরিস্কার করার সময়ও দুরে থাকতে হবে।

 

দুষিত বাতাস, ঘরের ধুলো, ফুলের পরাগ, ধোয়া, কাঁচা রংয়ের গন্ধ, চুনকাম, পুরানো ফাইলের ধুলো ইত্যাদি দেহে এলার্জিক বিক্রিয়া সৃষ্টি করে হাপানি রোগের সৃষ্টি করতে পারে। হাপানির সঙ্গে এলার্জির গভীর সংযোগ আছে তাই যারা হাপানিতে ভুগছেন তাদেরকে এগুলি পরিত্যাগ করে চলতে হবে।

আবার ছত্রাক দেহে এলার্জি তথা হাপানি সৃষ্টি করে। ছত্রাক একটি অতি ক্ষুদ্র সরল উদ্ভিদ। কোন কোন খাদ্য ছত্রাক দ্বারা দুষিত হয়ে থাকে। আবার কোন কোন খাদ্য যেমন- পনির, পাউরুটি এবং কেক তৈরিতে ছত্রাক ব্যবহার হয়। এই ছত্রাক এলার্জি তথা হাপানি সৃষ্টির একটি অন্যতম কারণ।

ফোড়া, পাঁচড়া, মাথা ব্যথা, জ্বর, শরীর ব্যথা ইত্যাদির জন্য পেনিসিলিন ও অ্যাসপিরিন এই ওষুধ দুটো আমরা ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়াই খেয়ে থাকি। পেনিসিলিন ও অ্যাসপিরিন থেকে শরীরে এলার্জি জনিত চুলকানি হতে পারে এমনকি অতিরিক্ত পেনিসিলিন ব্যবহারের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ওষুধ সেবন করা যাবে না।

খাদ্যে প্রচুর এলার্জির সম্ভাবনা থাকে যেমন- দুধে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গরুর দুধে খুব বেশি এলার্জি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে গরুর দুধে গায়ে চুলকানি, হাপানি ইত্যাদি হতে পারে। এছাড়াও মাছ, বাদাম, কলা, আপেল, আঙ্গুর, ব্যাঙের ছাতা, গম, ডিম, তরমুজ, পেয়াজ, রসুন, চকোলেট এমনকি ঠান্ডা পানীয়ও কোন কোন ব্যক্তির এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে।

শিশুকে টিকা বা ভ্যাকসিন দেওয়ার পর অনেক সময় চুলকানি বা ঠান্ডাজনিত কোন সমস্যা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।

মশা, বেলেমাছি, মৌমাছি, বোলতা, ভীমরুল প্রভৃতি পতঙ্গের কামড়ে গায়ে চুলকানি, স্থানটি ফুলে যাওয়া এমনকি হাপানি পর্যন্তও হতে দেখা যায়। এছাড়াও শরীরে পশম বা পালক আছে এমন গৃহপালিত পশু যেমন- বিড়াল, কুকুর ইত্যাদি এবং গৃহপালিত পাখিও অনেক সময় এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়া আর্টিকোরিয়া (আমবাত) নামক একটি চর্মরোগে ত্বকে চাকা চাকা হয়, ফুলে ওঠে এবং চুলকানি হয়। অধিকাংশ মানুষের জীবনের কোন না কোন সময় এই রোগটি হয়ে থাকে। এই আর্টিকোরিয়া শরীরের কোন নির্দিষ্ট অংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে আবার সমস্ত শরীরে ছড়িয়েও পড়তে পারে। এ ধরনের এলার্জিতে প্রচন্ড চুলকানির সাথে বিভিন্ন আকারের লালচে চাকা চাকা ফোলা দাগ হতে পারে। নানান কারন এটা হতে পারে যেমন- খাদ্য এলার্জি থেকে (বাদাম, ডাল, মাংস, ডিম), পতঙ্গের কামড়ে (বোলতা, মৌমাছি, ভীমরুল, মাকড়সা) ইত্যাদি কারনে এটা হতে পারে।

প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা :
রক্ত পরীক্ষা (রক্তে ইয়োসিনোফিলের মাত্রা বেশি আছে কিনা তা নির্ণয়)।
সিরাম আইজিইর মাত্রা (সাধারণত এলার্জি রোগীদের ক্ষেত্রে মাত্রা বেশি হয়)।
স্কিন প্র্রিক টেস্ট (এ পরীক্ষায় রোগীর চামড়ায় বিভিন্ন এলার্জেন দিয়ে এ পরীক্ষা করা হয় এবং এ পরীক্ষাতে কোন কোন জিনিসে রোগীর এলার্জি আছে তা নির্ণয় করা হয়)।
বুকের এক্স-রে (হাঁপানি রোগের ক্ষেত্রে বুকের এক্স-রে করে বোঝা যায়, অন্য কোনো কারণে শ্বাসকষ্ট হচ্ছে কিনা)।
স্পাইরোমেট্রি (এ পরীক্ষায় রোগীর ফুসফুসের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়)।

এলার্জির চিকিৎসা :
যদি এলার্জির সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়, তখন তা পরিহার করার মাধ্যমে সহজেই এলার্জি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলার্জি ভেদে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে অনেক ক্ষেত্রে এলার্জি উপশম করা যায়। এলার্জি দ্রব্য থেকে এড়িয়ে চলা ও ওষুধের পাশাপাশি ভ্যাকসিন নেয়ার মাধ্যমে সহজেই এ সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায়। এ পদ্ধতির ব্যবহারে কর্টিকোস্টেরয়েডের ব্যবহার কমে যায় এবং কর্টিকোস্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে রেহাই পাওয়া যায়। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে বিশেষ করে উন্নত দেশগুলোতে এ পদ্ধতিতে চিকিৎসা দেয়া হয়। এটাই এলার্জি রোগীদের দীর্ঘমেয়াদে সুস্থ থাকার একমাত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। অনেকের ধারণা এলার্জি একবার হলে আর সারবে না কিন্তু প্রথমদিকে ধরা পড়লে এলার্জিজনিত রোগ একেবারেই সারিয়ে ফেলা সম্ভব। অপরদিকে অবহেলা করলে এবং রোগ দীর্ঘসময় ধরে থাকলে চিকিৎসা একটু কঠিন হতে পারে।

এলার্জি জাতীয় খাবার :
কোন খাবারে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা হলে, সেই খাবারটি দীর্ঘদিন বন্ধ রাখতে হবে। তারপর পুনরায় খাওয়া শুরু করে দেখতে হবে। যদি কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হয় তবে খাওয়া চালিয়ে যেতে পারেন কিন্তু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে খাবারটি বন্ধ করে দিতে হবে। খাবারে অ্যালার্জির কারণে বেশ কিছু সমস্যা যেমন- বমি, মাথাব্যথা, পেট ব্যথা, ডায়রিয়া ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। কোন কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে তা খুঁজে বের করে সে খাবারগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই হবে শ্রেষ্ঠ উপায়। যেকোনো খাবারই কারও কারও জন্য শরীরে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় চিংড়ি মাছ, ইলিশ মাছ, হাঁসের ডিম, গরুর মাংস ইত্যাদি খাবার শরীরে অ্যালার্জি তৈরি করে থাকে। কোনো একটি খাবারে একজনের শরীরে অ্যালার্জিজনিত সমস্যা তৈরি হলে, সেই খাবারটি অন্যজনের শরীরেও অ্যালার্জি তৈরি করবে এমন নয়। যে খাবারে অ্যালার্জি হয় সেটি এড়িয়ে চলতে হবে। তার পরও সমাধান না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজন হলে ওষুধ খেতে হবে। পেট ব্যথা কিংবা ত্বকে র‌্যাশ উঠলে কলা উপকারি আবার এক গ্লাস পানিতে বেশি করে লেবু আর এক চা-চামচ মধু মিশিয়ে খেলেও উপকার পাওয়া যায়। খাবারের বেলায় ভিটামিন-ই সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে। অ্যালার্জির বিরুদ্ধে লড়তে ভিটামিন-ই খুবই কার্যকর। গাজর কিংবা শসার রসেও প্রচুর অ্যালার্জি প্রতিরোধী উপাদান আছে। যাদের অ্যালার্জির সমস্যা বেশি আছে, তাঁদের অ্যালকোহল, চা এবং কফি না পান করাই ভাল।

এলার্জি থেকে মুক্তির উপায় :
প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করার সময় কিছু ময়লা বইয়ের সেলফে জমে থাকে এবং জমে থাকা ময়লা অ্যালার্জেন সৃষ্টি করে। দু-এক দিন পর পর বইগুলো নাড়াচাড়া করলে সেলফে থাকা ডাস্ট চলে যাবে।

বিছানার ডাস্ট মাইট থেকে পরিত্রাণ পেতে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, মশারি ইত্যাদি ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এছাড়া ঘরের চারপাশে মেঝে ভালভাবে পানি ও ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। প্রতিদিন উঠোনে বা বেলকনিতে আসা রোদে লেপ, কম্পল ইত্যাদি ভালভাবে শুকিয়ে নেয়া যেতে পারে কারন রোদের আল্ট্রা ভায়োলেট রশ্মিতে হাউজ ডাস্ট মাইট মরে যায়।

এক সপ্তাহ পর পর ভেজা কাপড় দিয়ে দরজা এবং জানালা পরিষ্কার করা উচিত। সেইসঙ্গে দরজা এবং জানালার পর্দা মাঝে মধ্যে ভালভাবে ধুতে হবে।

গোসলখানার জানালা খোলা রাখতে হবে যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে। গোসলখানা যাতে ভেজা না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। নিয়মিত গোসলখানার মেঝে, বাথটাব ও প্যান ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।
রান্না ঘরের ময়লা-আবর্জনা থেকে মুক্ত হতে প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। ফ্লোর ক্লিনার ও গরম পানি দিয়ে রান্না ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।

শিশুদের খেলনা, বিভিন্ন শোপিস, জুতা, ফ্যান, এসি, ঝাড়বাতি ইত্যাদিতে ধুলোবালি জমে অ্যালার্জি হতে পারে। তাই নিয়মিত এসব পরিষ্কার করতে হবে।

বাসায় পশুপাখি থাকলে প্রতিদিন গোসল করাতে হবে। পশুপাখি যে জায়গায় থাকে সেই জায়গাটা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। অবশ্যই খাওয়ার পর উচ্ছিষ্ট খাবার ফেলে দিতে হবে। প্রতিদিন সকালে নিয়মিত পশুপাখিকে গোসল করালে এবং থাকার জায়গা পরিষ্কার করলে ভাল।

এলার্জিজনিত কিছু রোগ
খাবারে এলার্জি : কিছু কিছু খাবারে এলার্জির সম্ভাবনা থাকে যেমন- দুধে বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে গরুর দুধে এলার্জি হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে গরুর দুধে গায়ে চুলকানি, হাপানি ইত্যাদিও হতে পারে। এছাড়াও ডিম, মাছ, বাদাম, কলা, পেয়াজ, রসুন, আপেল, আঙ্গুর, ব্যাঙের ছাতা, তরমুজ, চকোলেট, ঠান্ডা পানীয় ইত্যাদি কোন কোন ব্যক্তির এলার্জি সৃষ্টি করতে পারে। একেক খাবারে একেক ব্যক্তির এলার্জি হতে পারে। খাবারে এলার্জির উপসর্গগুলো হল পেটে ব্যথা, বমি বমি ভাব অথবা বমি, ডায়রিয়া ইত্যাদি।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত এলার্জি : পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া জনিত এলার্জি খুবই মারাত্মক হতে পারে। এলারজেন শরীরের সংস্পর্শে আসার সঙ্গে সঙ্গে এটা শুরু হতে পারে। নিম্ন উল্লিখিত উপসর্গগুলো হতে পারে। সাধারণত মাইট নামক এক ধরনের ক্ষুদ্র জীবানু যা ধুলাতে থাকে, মোল্ড, ফুলের রেণু, ঠাণ্ডা এবং শুষ্ক আবহাওয়া, খাবার, ঘরের ধুলো ময়লা, পশুপাখির পশম এবং চুল, পোকা মাকড়ের কামড়, ঔষুধ, রাসায়নিক দ্রব্যাদি, প্রসাধনী ইত্যাদির সংস্পর্শে এটা হয়ে থাকে।

এলার্জিজনিত সর্দি বা এলার্জিক রাইনাইটিস : এলার্জিজনিত সর্দি এর উপসর্গ হচ্ছে অনবরত হাঁচি, নাক চুলকানো, নাক দিয়ে পানি পড়া বা নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া, চোখ দিয়ে পানি পড়া, চোখ লাল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি। এলার্জিক রাইনাইটিস দুই ধরনের হয়। বছরের একটি নির্দিষ্ট সময়ে এলার্জিক রাইনাইটিস হলে এটা সিজনাল এলার্জিক রাইনাইটিস এবং বছরের যেকোনো সময় হলে এটা পেরিনিয়াল এলার্জিক রাইনাইটিস।

আর্টিকেরিয়া : আর্টিকেরিয়া রোগে ত্বকে চাকা চাকা হয়, ফুলে ওঠে এবং চুলকানি হয়। অধিকাংশ মানুষের কোন না কোন সময় এই রোগটি হয়ে থাকে।আর্টিকোরিয়া শরীরের কোন নির্দিষ্ট অংশে সীমাবদ্ধ থাকতে পারে আবার সমস্ত শরীরেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এ রোগে প্রচন্ড চুলকানির সাথে বিভিন্ন আকারের লালচে চাকা চাকা ফোলা দাগ হতে পারে।

এজমা বা হাঁপানি : এজমা বা হাঁপানির উপসর্গ হচ্ছে কাশি, শ্বাস নিতে ও ছাড়তে কষ্ট, ঘন ঘন নিঃশ্বাসের সহিত বাঁশির মতো শব্দ হওয়া বা বুকে চাপ লাগা, বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডা লাগা ইত্যাদি।

এলার্জিক কনটাক্ট ডারমাটাইটিস : চামড়ার কোথাও কোথাও শুকনো, খসখসে ও ছোট ছোট দানা যদি বহিস্থ উপাদান বা এলার্জেনের সংস্পর্শে ত্বকে প্রদাহ সৃষ্টি করে, তাকে সংস্পর্শজনিত এলার্জিক ত্বক প্রদাহ বা এলার্জিক কনটাক্ট ডারমাটাইটিস বলা হয়।

একজিমা : সাধারণত একজিমা একটি বংশগত চর্মরোগ যার ফলে ত্বক শুষ্ক হয়, চুলকায়, আঁশটে এবং লালচে হয়। নখ দিয়ে খোঁচানোর ফলে ত্বক পুরু হতে পারে আবার কখনও কখনও ওঠে যায়। ফলে ত্বক জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয় এবং ত্বক থেকে চুয়ে চুয়ে পানি পড়ে। সচরাচর এটি বাচ্চাদের মুখে, ঘাড়ে, হাত এবং পায়েই বেশি হয়ে থাকে।

সবশেষে, কার কিসে অ্যালার্জি সেটা নির্ণয়ের জন্য সবারই একটি অ্যালার্জি পরীক্ষা করানো উচিত। কারও ফাঙ্গাল অ্যালার্জি হয় আবার কারও হয় খাবারে। আমাদের সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা, অ্যাজমা হলে গরুর মাংস, চিংড়ি, বোয়াল মাছ, গজার মাছ ইত্যাদি খাওয়া বাদ দিতে হবে। এটা ঠিক নয়। সাধারণত শতকরা ৯৮ শতাংশ রোগীর ক্ষেত্রেই গরুর মাংসে অ্যালার্জি হয় না। তাই অ্যাজমা হলেই গরুর মাংস ও চিংড়ি মাছ খাওয়া যাবে না, এটি ঠিক নয়। এলার্জি একটি প্রতিরোধযোগ্য রোগ। এলার্জিতে আক্রান্ত হলে যদি কোন খাবার কিংবা ঔষধের সাথে এর সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়, তবে সেই খাবার অবশ্যই পরিহার করতে হবে। সর্বোপরি এলার্জির সঠিক কারন নির্ণয় করে সেটা এড়িয়ে চলতে হবে।

এলার্জি চিরতরে দূর করার উপায়

এলার্জির কারণে ভুগে থাকেন অনেকেই। এলার্জির যন্ত্রণা ভুক্তভোগীরাই জানেন। এলার্জি দূর করতে নানারকম প্রচেষ্টা করেন অনেকেই। সুস্বাদু সব খাবার সামনে রেখেও খেতে পারেন না শুধু এলার্জির ভয়ে। যার কারণে ভুগতে হয় পুষ্টিহীনতায়। এটি দূর করা তবু যেন সম্ভব হয় না। তবে একটি উপায় মেনে চললে সহজেই আপনি এলার্জিকে দূর করতে পারবেন সারা জীবনের জন্য। চলুন জেনে নেই-
১ কেজি নিম পাতা ভালো করে রোদে শুকিয়ে নিন। শুকনো নিম পাতা পাটায় পিষে গুঁড়ো করুন এবং তা ভালো করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন একটি কৌটায় ভরে রাখুন। এক চা চামচের ৩ ভাগের ১ ভাগ নিমপাতার গুঁড়া এবং ১ চা চামচ ইসবগুলের ভুষি ১ গ্লাস পানিতে আধা ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। আধা ঘণ্টা পর চামচ দিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে, দুপুরে ভরা পেটে এবং রাতে শোয়ার আগে খেয়ে ফেলুন। ২১ দিন একটানা খেতে হবে। কার্যকারিতা শুরু হতে ১ মাস লেগে যেতে পারে। এরপর থেকে এলার্জির জন্য যা যা খেতে পারতেন না, যেমন- হাঁসের ডিম, বেগুন, গরুর গোশত, চিংড়ি, কচু, কচুশাক, গরুর দুধ, পুঁইশাক, মিষ্টি কুমড়াসহ অন্যান্য খাবার খান। আর সমস্যা হবে না।

শারীরিক অক্ষমতার কারণ ও প্রতিকার

পুরুষের শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতা অথবা পুরু/ষত্ব হীনতা আজকাল প্রকট আকার ধারণ করছে। একদম তরুণ থেকে শুরু করে যে কোন বয়সী পুরুষের মাঝে দেখা যাচ্ছে এমন যৌ/ন সমস্যা।

অনেক পুরুষ অকালেই হারিয়ে ফেলছেন নিজের সক্ষমতা, উঠতি বয়সের যুবকরা রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ছেন। বাড়ছে দাম্পত্যে অশান্তি, সন্তানহীনতার হার এবং সত্যি বলতে কি বাড়ছে ডিভোর্সও।

কিন্তু কারণ কি পুরুষদের এই ক্রমশ শারীরিকভাবে অক্ষম বা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে? কারণ লুকিয়ে আছে আমাদের বর্তমানের আধুনিক জীবনযাত্রার মাঝেই।

হ্যাঁ, আপনার প্রতিদিনের স্ট্রেসভরা অস্বাস্থ্যকর জীবন, আপনার নিজের কোনও একটা ভুলই হয়তো আপনাকে ক্রমশ ঠেলে দিচ্ছে পুরুষত্বহীনতার দিকে। অথবা হতে পারে আপনার শরীরে ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে যৌ/ন হরমোনের পরিমাণ, যা আপনার সংসারকে করছে অশান্তিময়।

কেন এমন হচ্ছে সেটা জানার আগে জানতে হবে পুরুষের একান্ত দুর্বলতাগুলো কী কী বা কেমন হতে পারে। তা জেনে নিলে আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, আপনার সমস্যাটা কোথায়।

শারীরিক অক্ষমতা বা দুর্বলতার বিষয়টিকে মোটামুটি ৩ ভাগে ভাগ করা যেতে পারে-

১. ইরেকশন ফেইলিউর : পুরুষ লি/ঙ্গের উত্থানে ব্যর্থতা। এতে করে লিং/গের উত্থানে সমস্যা তৈরি, যাতে করে দীর্ঘদিন যাবত লিং/গ গরম হয় না এবং সহ/বাসের উপযোগী হয় না।

২. পেনিট্রেশন ফেইলিউর : লি/ঙ্গের যো/নিদ্বার ছেদনে ব্যর্থতা, বা যো/নিতে প্রবেশের মত পর্যাপ্ত উথিত না হওয়া। এতে করে মাঝে মাঝে লিং/গ উত্থিত বা গরম হয় আবার গরম হয়েও শীতল হয়ে যায়। আবার গরম হলেও স্ত্রী যো/নীতে প্রবেশ করা মাত্রই তা নরম হয় যায়, ফলে সংসারে বাড়ে অশান্তি। বিবাহ বিচ্ছেদ বাড়তে থাকে।

৩. প্রি-ম্যাচুর ইজাকুলেশন : সহ/বাসে দ্রুত বী/র্য-স্খলন, তথা স্থায়িত্বের অভাব। এতে করে পুরুষের লিং/গ গরম হলেও তা খুব দ্রুতই পতন হয় বা বী/র্য আউট হয়ে যায়। তাতে নারী এবং কেউ পরম সুখলাভ করতে পারে না।

এ সমস্যার জন্য নাইট কিং পাউডার ও সিরাপ বেশ কার্যকরী ঔষধ। এই ঔষধ সেবনে উপরোক্ত সমস্যার সমাধান হবে, ইনশাল্লাহ।

কারণগুলি কি কি হতে পারে ?

প্রাকৃতিক বা শারীরিক কারণগুলোর মাঝে মুখ্য হলো-

১. ডায়াবেটিস,

২. লি/ঙ্গে জন্মগত কোনওপ্রকার ত্রুটি,

৩. সে/ক্স হরমোনের ভারসাম্যহীনতা,

৪. গনোরিয়া বা সিফিলিসের মত যৌ/নরোগ ইত্যাদি।

তাছাড়াও প্রাকৃতিক শারীরিক সমস্যা ছাড়াও প্রচণ্ড কাজের চাপ, মানসিক অশান্তি, দূষিত পরিবেশ, ভেজাল খাওয়া দাওয়া, কম বিশ্রাম ও ব্যায়াম ছাড়া অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ইত্যাদি অনেক কারণই আছে ক্রমশ যৌ/ন সক্ষমতা হারিয়ে ফেলার পেছনে।

আবার অতিরিক্ত যৌ/ন সম্পর্কে যাওয়া, অতিরিক্ত মা/স্টার/বেট বা হ/স্তমৈ/থুন করা, যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য হাবিজাবি ওষুধ সেবন ইত্যাদি কারণকে অবহেলা করলেও চলবে না।

এছাড়া বয়স জনিত অসুস্থতা, সঙ্গিনীর সাথে বয়সের পার্থক্য বা সঙ্গিনীকে পছন্দ না করা, এইডসভীতি, পর্যাপ্ত যৌ/ন জ্ঞানের অভাব, ত্রুটিপূর্ণ যৌ/নাসনও অক্ষমতা বা দুর্বলতার জন্য দায়ী হতে পারে।

কী কি করবেন ?
প্রথমেই যা করবেন, সেটা হলো নিম্নোক্ত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। লজ্জা না করে নিজের সমস্ত সমস্যা খুলে বলুন ও ডাক্তারের পরামর্শ মত প্রয়োজনীয় সকল চিকিৎসা নিন।

এতে লজ্জার কিছুই নেই। একটাই জীবন। লজ্জার চাইতে নিজেকে সুস্থ ও সক্ষম রাখা জরুরী। তাই দ্বিধাহীন চিত্তে যোগাযোগ করুন। আপনার সমস্যা অনুসারে আপনাকে ট্রিটমেন্ট দেওয়া হবে।

আপনার ডায়াবেটিস থাকলে প্রয়োজনীয় সকল নিয়ম কানুন মেনে চলুন।
নিজের জীবনধারাকে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনে বদলে ফেলুন। নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার খান, ব্যায়াম করুন, রাতে পর্যাপ্ত ঘুমান, চেষ্টা করে কাজের চাপের মাঝেও বিশ্রাম নিতে। আপনার শরীর যখন সুস্থ ও সক্ষম থাকবে, যৌনজীবনও থাকবে সুন্দর।

সঙ্গীর সাথে রোমান্টিক জীবনের উন্নতি করুন। এক ঘেয়ে যৌ/ন জীবনে নানান রকমের চমক ও আনন্দ নিয়ে আসুন। তাঁকেও বিষয়টি বুঝিয়ে বলুন যে নতুন চমক এলে আপনার মানসিকভাবে সাহায্য হবে। রোমান্টিক বেডরুম, আকর্ষণীয় অন্তর্বাস, সে/ক্স টয় ইত্যাদি এসব ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে।

যদি সঙ্গীকে অপছন্দ করার কারণে সমস্যা হয়ে থাকে, সেক্ষেত্রে চেষ্টা করুন সঙ্গীকে ভালবাসতে। তার সাথে দূরে কোথাও নিরিবিলি বেড়াতে যান, তাঁকে গভীর ভাবে জানার চেষ্টা করুন। আস্তে আস্তে তার প্রেমে পড়ার চেষ্টা করুন।

মানসিকভাবে প্রেমে পরলে শরীরটাও সাড়া দেবে। একটা জিনিষ মনে রাখবেন, বাস্তবের নারীর সাথে সিনেমার নায়িকা বা প/র্ণ স্টারদের মিল খুঁজতে যাবেন না। নিজের দিকে তাকান, নিজের সাধারণত্ব দেখুন। দেখবেন, সঙ্গীকেও আর খারাপ লাগছে না।

কী করা উচিত নয় ?
অতিরিক্ত মাস্টারবেট করার অভ্যাস অবিলম্বে ত্যাগ করুন। আর যাদের স্ত্রী আছে তাঁরা স্ত্রীর সাথেই যৌ/নজীবনে অভ্যস্ত হয়ে উঠুন।

বাজারে সাময়িকভাবে যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ানোর কিছু ওষুধ পাওয়া যায়, যেগুলো সেবনে ২৪ ঘণ্টার জন্য যৌ/ন ক্ষমতা বাড়ে। এইধরনের ওষুধ মোটেও ব্যবহার করবেন না। এতে সাময়িক ক্ষমতা বাড়লেও, ক্রমশ আসলে ক্ষমতা কমতেই থাকবে।

যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। তাই প্রথমেই আমাদেরকে বুঝতে হবে যৌ/ন রোগ কী?

যৌ/ন রোগ কয়েক প্রকার হতে পারে। যেমন :

১. সহ/বাসে অসমার্থতা।

২. দ্রু/ত বী/র্যপাত।

৩. অসময়ে বী/র্যপাত।

৪. সহ/বাসের আগেই বী/র্যপাত। অর্থাৎ নারীদেহ কল্পনা করলেই বী/র্যপাত হয়ে যাওয়া।

৫. প্রস্রাবের সাথে বী/র্যপাত।

৬. প্রস্রাবের বেগ হলেই বী/র্যপাত। স্বপ্নদোষ। মেহ রোগ।

৭. যৌ/নবাহিত রোগ। যেমন. গনোরিয়া, ক্লামিডিয়া, হার্পিস ইত্যাদি।

ওপরের ছয় নম্বর পর্যন্ত রোগের চিকিৎসা এক প্রকারের। আর তা হচ্ছে : নাইট কিং নিয়মিত সেবন করা। কয়েক মাস সেবন করলেই এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

নাইট কিং খুব ভালো মানের ঔষধ। যা সেবন আপনি দ্রুত বী/র্যপাত থেকে মুক্তি পাবেন। আর সাত নম্বর রোগগুলো থেকে মুক্তি পেতে হলে দীর্ঘদিন যাবত ঔষধ সেবন করতে হবে।

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বস্ততার সাথে ঔষধ ডেলিভারী দেওয়া হয়।

ঔষধ পেতে যোগাযোগ করুন :

হাকীম মিজানুর রহমান (ডিইউএমএস)

হাজীগঞ্জ, চাঁদপুর।

ইবনে সিনা হেলথ কেয়ার

একটি বিশ্বস্ত অনলাইন স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান।

মুঠোফোন : (চিকিৎসক) 01762-240650

(সকাল দশটা থেকে রাত্র দশটা। নামাজের সময় কল দিবেন না।)

ই-মেইল : ibnsinahealthcare@gmail.com

সারাদেশে কুরিয়ার সার্ভিসে ঔষধ পাঠানো হয়।

শ্বেতীরোগ একজিমাযৌনরোগ, পাইলস (ফিস্টুলা) ও ডায়াবেটিসের চিকিৎসক।

আরো পড়ুন : শ্বেতী রোগের কারণ, লক্ষ্মণ ও চিকিৎসা

আরো পড়ুন : যৌন রোগের শতভাগ কার্যকরী ঔষধ

আরও পড়ুন: বীর্যমনি ফল বা মিরছিদানার উপকারিতা

আরো পড়ুন : অর্শ গেজ পাইলস বা ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা

আরো পড়ুন :  নারী-পুরুষের যৌন দুর্বলতা এবং চিকিৎসা

আরো পড়ুন : ডায়াবেটিস প্রতিকারে শক্তিশালী ভেষজ ঔষধ

আরো পড়ুন : দীর্ঘস্থায়ী সহবাস করার উপায়

Loading

শেয়ার করুন